You can also earn money by answering questions on this site Find out the details

Categories

Sister Links: -- Nishiddho--BDLove24--Cerapatabd ....
71 views
in সাধারণ জ্ঞান by Earnings: 0.071 Usd (66 points)

1 Answer

0 like 0 dislike
কয়েক বছর আগের কথা। বাংলাদেশের আখাউড়া দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবেশের সময় আগরতলার স্থলবন্দরে শুল্ক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি সাবানের (টয়লেট সোপ) একটি চালান আটকে দেয়। শুল্ক কর্মকর্তা যুক্তি দেন যে সে দেশের ১৯৪০ সালের ওষুধ ও প্রসাধন আইনের এবং ১৯৪৫ সালের বিধিমালার আওতায় আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে সাবান আমদানি নিষিদ্ধ।
বাংলাদেশি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটি বিপাকে পড়ে যায়। শুরু হয় ছোটাছুটি। ঢাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত একটি প্রভাবশালী বাণিজ্য সংগঠনের সহায়তায় জানা যায় যে ভারত ২০০৭ সালে এক আদেশবলে চল্লিশের দশকের জারি করা সেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তার মানে আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে সাবান প্রবেশে কোনো বাধা নেই। ফলে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় সাবান রপ্তানিতেও কোনো বাধা নেই।
তবে হঠাৎই এই অশুল্ক বাধা আসায় যে জটিলতা দেখা দেয়, তা নিষ্পত্তি করতে বেশ কিছুদিন সময় ক্ষেপণ হয়। তাতে করে স্বাভাবিকভাবে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বেড়ে যায়। বাড়ে হতাশাও। এ রকম ঘটনা একেবারে কম নয়।
কিংবা ধরা যাক ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে পণ্য আমদানি-রপ্তানির অবস্থা। ভারতের পাঞ্জাবরাজ্যের অতেরি সীমান্তের ওপারেই পাকিস্তানের ওয়াগাহ সীমান্ত। এই সীমান্ত পথ দিয়েই দুই দেশের স্থলবাণিজ্য সম্পন্ন হয়। কিন্তু পাকিস্তান এই পথে ভারতকে মাত্র ১৩৭টি পণ্য রপ্তানি করতে দেয়। অন্যদিকে ভারতীয় আমদানিকারকেরা দৈনিক ১০ ঘণ্টা সময় পায় পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত পণ্য খালাস ও কাস্টমস ছাড়সহ যাবতীয় কাজ সারতে।
আবার পাকিস্তানি চামড়াজাত পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে হলে ভারতীয় ভেটেরিনারি বিভাগ থেকে আলাদাভাবে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে হয়। পাকিস্তানি পরীক্ষাগারের ছাড়পত্র গ্রহণযোগ্য হয় না। পাকিস্তানি সিমেন্ট রপ্তানিকারকদের ১০ হাজার ডলারের ব্যাংক গ্যারান্টি দাখিল করতে হয়।
এ ছাড়া দুই সীমান্তেই পর্যাপ্ত পণ্যাগার নেই। অর্থাৎ দুই দেশেরই আমদানি-রপ্তানির পণ্যসমূহ যখন পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ সময় রাখার প্রয়োজন হয়, তখন তা সংরক্ষণের সমস্যা হয়ে যায়।
আরেকটি ঘটনা দেখা যাক। পাকিস্তানের লাহোর থেকে একজন রপ্তানিকারক জাহাজে করে ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনারে ২৯ মেট্রিক টন ক্যালসিয়াম কার্বাইড বাংলাদেশে প্রেরণ করেন। চট্টগ্রাম বন্দরে এটি খালাসের সময় শুল্ক কর্তৃপক্ষ আটকে দেয়। কেননা, এ ধরনের রাসায়নিক পণ্য বাংলাদেশে আমদানির ক্ষেত্রে পরিমাণ আরও অনেক কম হতে হয়। তবে বিষয়টি আগে থেকে স্পষ্টভাবে কোথাও উল্লেখ না থাকায় এই বিপত্তি।
ঘটনাগুলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেই ঘটেছে। বিশেষজ্ঞ না হয়েও বোঝা যায় যে এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা বা পদক্ষেপ বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য সহায়ক নয়। তার পরও চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালিত হয় বলে ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য করে যান।
কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিজেদের মধ্যে যে বাণিজ্য করে থাকে, তা দেশগুলোর বৈশ্বিক বাণিজ্যের তুলনায় অনেক কম। ২০০৬ সাল থেকে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (সাফটা) কার্যকর হওয়ার পরও এখানকার আঞ্চলিক বাণিজ্য অর্থাৎ এই দেশগুলোর পারস্পরিক বাণিজ্য এই অঞ্চলের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ। অন্যদিকে আসিয়ানের নিজ আঞ্চলিক বাণিজ্য ২২ শতাংশ আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের তা ৫৫ শতাংশ।
একটা সময় পর্যন্ত উচ্চহারে শুল্ককে আন্তঃ আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হতো। তবে সাফটার পর ক্রমান্বয়ে তা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। তার পরও পারস্পরিক বাণিজ্য কাঙ্ক্ষিত হারে না বাড়ার কারণ হিসেবে এখন অশুল্ক বাধাকে (এনটিবি) দায়ী করা হচ্ছে। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বললে, দায় হচ্ছে অশুল্ক পদক্ষেপ (এনটিএম)। শুরুতেই এর কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে।
এনটিএম হলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণমূলক বিধান, কার্যপ্রণালি, অনুমোদন প্রক্রিয়াসহ বাণিজ্য সংরক্ষণমূলক পদক্ষেপ যার মধ্যে আছে ডাম্পিংবিরুদ্ধ শুল্ক।
তার মানে এনটিএম কার্যত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হয়, যদিও এর অনেকগুলোই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) রীতিবিধির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। অন্যদিকে যেসব পদক্ষেপ ডব্লিউটিওর বিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, সেগুলোই মোটা দাগে এনটিবি হিসেবে অভিহিত। কিন্তু বাস্তবে এনটিএমের প্রভাব কতখানি? এনটিএমের কারণে বাণিজ্য সম্প্রসারণ কতটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে? কীভাবেই বা এসব এনটিএম কমিয়ে আনা যায়?
এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বাংলাদেশের তিনজন গবেষক একটি বিস্তারিত পর্যালোচনা করেছেন সার্ক ট্রেড প্রমোশন নেটওয়ার্কের (এসটিপিএন) আওতায়। বাংলাদেশের বাণিজ্য সংগঠন মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এ কাজে সহযোগিতা প্রদান করেছে। এ কাজের ফল হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে ‘এনটিএমএস ইন সাউথ এশিয়া: অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যানালিসিস’ শীর্ষক গবেষণাপত্র।
গবেষকত্রয়ীর পরিচিতি তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোস্তফা আবিদ খান এবং মেট্রো চেম্বারের সচিব সাকিব কোরেশী।
এ গবেষণা প্রসঙ্গে সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার আমদানি-রপ্তানিকারকেরা অনেক দিন থেকেই নানা ধরনের অশুল্ক বাধার কথা বলে আসছেন। এ বিষয়ে যেন একটি তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা যায় এবং এসব বাধা অপসারণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে জন্যই এ গবেষণা। আমরা আশা করছি, এটি ব্যবসায়ীদের যেমন সহায়ক হবে, তেমনি নীতিনির্ধারকদেরও কাজে আসবে।’
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে সার্কভুক্ত আটটি দেশের এনটিএমের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি দেশের আমদানি-রপ্তানিকারক, সরকারি নীতিনির্ধারক ও কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, তাঁদের মতামত নেওয়া হয়েছে এবং তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে দক্ষিণ এশিয়ার এনটিএমের ধরন ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অনেকগুলো দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশগুলোর অগ্রাধিকার পণ্যের ক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। গবেষকেরা সবকিছু পর্যালোচনা করে এই উপসংহারে এসেছেন যে দক্ষিণ এশিয়ায় এনটিএম একটি বড় সমস্যা, যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।
এ জন্য এনটিএমগুলোর একটি আঞ্চলিক মানদণ্ড নির্ধারণ এবং দেশগুলোর সরকারি ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে ক্রমান্বয় এনটিএম অপসারণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
by (4 points)

Related questions

-- Payment Method & Thresholds--Referral Program--Help--
-- FAQ --- Terms --DMCA ---Contact Us --
Language Version--English --Bengali ---Hindi ---
...