সব্যসাচী ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে উজ্জ্বল হয়ে আছেন যে ক’জন, তাদের অন্যতম হলেন বশীর আহমেদ। প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন অলরাউন্ডার ক্রীড়াবিদ। তার ক্যারিয়ার ছিল বর্ণাঢ্য ও স্বর্ণোজ্জ্বল। সেই পঞ্চাশ ও ষাট দশকে হকি, ফুটবল, অ্যাথলেটিকস, ক্রিকেটে ফুটিয়েছেন সাফল্যের ফুল। সে সময়ে বিশ্বসেরা পাকিস্তান জাতীয় হকি দলে হাতেগোনা মুষ্টিমেয় যে ক’জন বাঙালি খেলোয়াড় খেলার বিরল গৌরব অর্জন করেন, তিনি তাদের একজন এবং প্রথম। রাইট বা লেফট ইন পজিশনে চোখ ধাঁধানো স্টিক ওয়ার্ক, চমৎকার পজিশনাল প্লে ও ছন্দোময় ড্রিবলিং দিয়ে ছড়িয়েছেন মুগ্ধতা। অসম্ভব প্রিগতিসম্পন্ন ছিলেন। অধিনায়ক ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান হকি দলের। ফুটবলেও তার পায়ে ছিল শিল্পীত ঝিলিক। ইনসাইড ফরোয়ার্ড হিসেবে তিনি ছিলেন অধিকাংশ আক্রমণের উৎস। আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার েেত্র দেখিয়েছেন চমৎকার দতা। তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান দলের অপরিহার্য খেলোয়াড়। নিয়মিত খেলেছেন ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং কাব ও ঢাকা মোহামেডানের শিরোপাজয়ী দলে। দুরন্ত অ্যাথলেট হিসেবেও তার জুড়ি মেলা ভার ছিল। ছুটতেন বল্গা হরিণের মতো। ¯িপ্রন্ট, জাম্প, ডিসকাস থ্রোতে তার সাফল্যের আলোতে উদ্ভাসিত হয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, পূর্ব পাকিস্তান অ্যাথলেটিকস মিট। ক্রিকেটার হিসেবেও দেখিয়েছেন তার প্রতিভার দীপ্তি। এছাড়াও নানা খেলায় ছিল তার সদর্প বিচরণ। এরমধ্যে ছিল বেসবল, টেবিল টেনিস, বাস্কেটবল। খেলাটা ছিল তার কাছে নেশার মতো। খেলার মাঠের কিংবদন্তির এই নায়ক প্রশিক ও সংগঠক হিসেবেও ছিলেন সফল। ছিলেন প্রথম শ্রেণীর হকি ও ফুটবল রেফারী। ১৯৮০ সালে পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। হয়েছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব। বর্তমানে তিনি সোনালী অতীত কাবের সভাপতি। এমন বিশাল, বিপুল ও দেদীপ্যমান ক্রীড়াজীবনের অধিকারী বশির আহমেদের ফেলে আসা দিনগুলো নিয়ে ‘ক্রীড়াজগত’ পত্রিকার এ সংখ্যা থেকে প্রকাশিত হচ্ছে তার ধারাবাহিকভাবে জীবনকাহিনী “সোনালী অতীতের দিনগুলো”। সম্পাদক, ক্রীড়াজগত