জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনের বিধান আরও ২৫ বছর বহাল রাখা হচ্ছে। এ জন্য সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিল জাতীয় সংসদে উঠেছে। এটি হবে সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনী।
আজ মঙ্গলবার ‘সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) বিল-২০১৮’ সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে এটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
সংবিধান অনুযায়ী ৩৫০ জন সংসদ সদস্য নিয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ৩০০ জন এবং সংসদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে ৫০ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়। তবে ওই সময় নারী আসনের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। এখন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের মেয়াদ আছে ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এ অবস্থায় আবার নারী আসনের মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে শুরু করে ২৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার অব্যবহিত পরবর্তীকালে সংসদ ভেঙে না যাওয়া পর্যন্ত ৫০টি আসন কেবল নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং তাঁরা আইন অনুযায়ী সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।
সংবিধান সংশোধনী বিলটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় সমাজের সব ক্ষেত্রে নারীদের অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। সংরক্ষিত আসনের প্রয়োজনীয়তা এখনো আছে। একাদশ জাতীয় সংসদ সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যদের নিয়ে গঠন করতে হলে দশম সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় সংবিধানের এ-সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করা আবশ্যক।
বিল উত্থাপনের আগে স্বতন্ত্র সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য বিশেষ বিধান করতে বাধা নেই। পার্বত্য বা উপকূলীয় বা হাওর অঞ্চলের জন্য এটি করা যায়। নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনেও আপত্তি নেই। তবে নারী সমাজের বিশেষ অংশের জন্য, অরাজনৈতিক নারীদের বঞ্চিত করে শুধু রাজনৈতিক নারীদের জন্য আলাদা বিধান করা যায় না। প্রস্তাবিত বিলটি আইন হলে আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে। পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদ নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন করার ক্ষমতা দিয়েছে।
পরে বিলটি ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।