ওজোন একটি গ্যাস বিশেষ। ১৭৯৫ খ্রিষ্টাব্দে ভ্যান মরাম (van Marum) একটি যন্ত্রচলাকালে আঁশটে গন্ধ গন্ধের গ্যাসের উপস্থিতি অনুভব করেন। পরে ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে সোনবাঁ (schonbain) এই গন্ধের উৎসকে নতুন গ্যাস বিবেচনা করে নামকরণ করেন ওজোন। ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী সরে (Soret) একে অক্সিজেনের একটি সহরূপ (allotropy) হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন অংশে এই গ্যাসের অস্তিত্ব ধরা পড়ে না। তবে বায়ুমণ্ডলের উচুঁস্তরে এই গ্যাসের একটি স্তর রয়েছে। একে বলে ওজন স্তর।
তিনটি অক্সিজেন পরমাণুর সমন্বয়ে এই গ্যাসটি সৃষ্টি হয়ে থাকে। সাধারণত অক্সিজেন বা বায়ুর মধ্যে ৬৮ কিলোক্যালোরি পরিমাণ বিদ্যুৎ ক্ষরিত হলে- এই গ্যাস উৎপন্ন হয়। এর রাসায়নিক গঠন হলো-
3O2 – ৬৮ কিলোক্যালোরো 2O3
এর রঙ ঈষৎ নীল, হিমাঙ্ক -১৯২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (-৩১৪.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং স্ফুটনাঙ্ক -১১১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (-১৬৯.৫২ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। গ্যাসটি তরল ও কঠিন অবস্থায় ঘন নীল বর্ণের হয়ে থাকে। তবে এই অবস্থায় ওজোন বিস্ফোরক পদার্থে পরিণত হয়। গ্যাসটি পানি ও তারপিন তেলে দ্রবীভুত হয়। গ্যাসটি জীবাণু নাশক এবং বিরঞ্জকগুণ সম্পন্ন। জারক হিসাবে শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এই গ্যাসটি বায়ুমণ্ডলের উপরে যে ওজোনস্তর সৃষ্টি রয়েছে, তাতে এর সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি শোষিত হয়। এর ফলে পৃথিবীতে সবুজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিকাশ সম্ভব হয়েছে।