ঘানা বা গানা (ইংরেজি: Ghana গানা, আসান্তে চুই ভাষায়: Ghana বা Gaana গানা) পশ্চিম আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত এটি গোল্ড কোস্ট নামের একটি ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। ঐ বছর এটি সাহারা-নিম্ন আফ্রিকান দেশগুলির মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। আধুনিক ঘানার কয়েকশত মাইল উত্তর-পশ্চিমে ঊর্ধ্ব নাইজার নদীর তীরে অবস্থিত মধ্যযুগীয় সাম্রাজ্য ঘানার নামে দেশটির নামকরণ করা হয়। স্বাধীনতার পর আফ্রিকান বাকী দেশগুলির স্বাধীনতার জন্য ঘানা নেতৃত্ব দেয়।
ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশটিতে ১০০-রও বেশি জাতির লোকের বাস। কিন্তু অন্যান্য আফ্রিকান দেশগুলির মত এখানে দেশ বিভাজনকারী জাতিগত সংঘাত তেমন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেনি। আক্রা দেশের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। ইংরেজি সরকারী ভাষা হলেও বেশির ভাগ ঘানাবাসী কমপক্ষে একটি আফ্রিকান ভাষায় কথা বলতে পারেন।
ঘানার অর্থনীতি আফ্রিকার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতিগুলির একটি, কিন্তু এখনও কৃষি দেশটির অর্থনীতির মূল ভিত্তি এবং এখানকার বেশির ভাগ লোকই দরিদ্র। স্বর্ণখনিশিল্প, চকোলেটের উপাদান কাকাও উৎপাদন, এবং পর্যটন দেশটির আয়ের প্রধান উৎস। কয়েকশ বছর আগে ঘানা সোনার একটি উৎস বলে পরিচিত ছিল। ১৫শ ও ১৬শ শতকে যেসব ইউরোপীয় এখানে সোনার খোঁজে এসেছিলেন, তারা অঞ্চলটিকে গোল্ড কোস্ট নাম দেন।
সামরিক কু এবং অর্থনৈতিক সমস্যা ১৯৬০-এর দশক থেকে ১৯৮০-র দশক পর্যন্ত ঘানাকে বিপর্যস্ত করে রাখে। ১৯৯০-এর দশকে ঘানাতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আফ্রিকান রাজনীতিতে একটি নেতৃস্থানীয় দেশ হিসেবে এটি আবির্ভূত হয়। ১৯৯৭ সালে ঘানার এক কূটনীতিক কফি আনান জাতিসংঘের মহাসচিব হন।
নামকরনের ইতিহাস
ঘানা শব্দের অর্থ যোদ্ধা রাজা[১১][১২] মধ্যযুগীয় ঘানা সাম্রাজ্য থেকে এ নামের উৎপত্তি। বর্তমান ঘানা থেকে উত্তর ও পশ্চিম দিকে অবস্থান ছিল ঘানা সাম্রাজ্য-এর। ১৯৫৭ সালে ব্রিটিশ কলোনী গোল্ড কোস্ট স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার ছয়মাসের ১৯৫৭ সালে গোল্ড কোস্টের নাম ঘানা হিসেবে রাখা হয়।[১৩]
ইতিহাস
প্রগৌতিহাসিক যুগের নির্দশন প্রমাণ করে প্রাচীন ঘানাতে ব্রোঞ্জ যুগ থেকে মানুষের বসবাস ছিল।[১৪] যদিও এগারো শতক পর্যন্ত আধুনিক ঘানার দখলকৃত ছিল।[১৫] বর্তমান ঘানাতে ১৬শতকে বর্তমান অধিবাসীদের আবির্ভাব ঘটে।[১৬] এগারো শতকের প্রথমদিকে আকান জনগোষ্ঠী বুনুমান নামের জনবসতি গড়ে তোলে।[১৭] এই অঞ্চলেই ষোল শতকে গা ও দাগোমবা নামের দুটি ভিন্ন রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল।[১৬]