ব্রুনাই কিং ( Brunei King ) হলো চার থেকে সাড়ে চার কেজি ওজনের আম যা আষাঢ়ের পরে শ্রাবণ মাসের শেষ দিকে গিয়ে পাকে। অধিক ওজনের পাশাপাশি এটি খেতে সুস্বাদু বিধায় দেশে আমটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
মাগুরার জেলার শালিখা উপজেলার শতখালি গ্রামের বাসিন্দা জনাব আতিয়ার মোল্লা তার নার্সারিতে ব্রুনাই কিং( Brunei King ) জাতের আমের গাছ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। আতিয়ার রহমান পেশায় নার্সারি ব্যবসায়ী। তিনি ১৯৯২ সালে নিজস্ব উদ্যোগে তার ১০ শতক জমিতে নার্সারি শুরু করেন। বর্তমানে ৭ বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে তার নার্সারিসহ বিভিন্ন দেশি- বিদেশি নতুন নতুন জাতের ফল ও ফুলের বাগান। আতিয়ার মোল্লার ভাগ্নে ব্রুনাই রাজ পরিবারে বাগান পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালে তিনি তার ওই ভাগ্নের মাধ্যমেই সেখান থেকে ’ব্রুনাই কিং’ নামের বিশাল আকৃতির আমের এ জাতটি সংগ্রহ করেন।
বর্তমানে তিনি কলমের মাধ্যমে ৫০০ এর বেশি চারা তৈরি করেছেন। শুরুর দিকে তিনি প্রতি চারা এক হাজার টাকা দরে বেশ কিছু আমের চারা বিক্রি করেছেন। বর্তমানে উদ্ভাবিত এ জাতের প্রতিটি চারা ৩০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন। প্রতি বছর চারা বিক্রি করে তিনি ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা অর্জন করে থাকেন।
এই জাতের আমের বৈশিষ্ট্যঃ
এই জাতের আমের গাছের উচ্চতা ৮-১০ ফুট।
বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাসের মধ্যে এই জাতের চারা রোপণ করতে হয়।
এ জাতের আমের চারা রোপণের ২ বছরের মধ্যেই আম ধরে এবং শ্রাবণের শেষের দিকে আম পাকে।
প্রতিটি আমের ওজন সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ কেজি।
প্রতিটি আম আঁশমুক্ত, মিষ্টি ও সুস্বাদু।
আমটি দেখতে অনেকটা কলার মতো লম্বা হয়ে থাকে।
কাঁচা আম খেতে কিছুটা টক, মিষ্টি স্বাদ এবং রং হয়ে থাকে কালচে সবুজ। তবে পাকা আমের স্বাদ অনেকটা ফজলি আমের মতো।
এই জাতের আমের আঁটি (বিচি) একদম ছোট এবং রসালো হয়ে থাকে।
এই জাতের আম একটু দেরিতে অর্থাৎ শ্রাবণ মাসে পাকে বলে এগুলোর দাম তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়।
মাতৃগাছে প্রতিবছর ২০-৩০টি পর্যন্ত আম হয়ে থাকে।
প্রাপ্তি স্থানঃ মাগুরার শালিখার শতখালী গ্রামের আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে কলম নিয়ে মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারে লাগিয়েছিলেন। হর্টিকালচার সেন্টার ও আতিয়ার রহমানের নার্সারিতে কলম লাগানো গাছ আছে, যা থেকে সংক্রায়নের মাধ্যমে নতুন চারা তৈরি করে তা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও মুন্সিগঞ্জ জেলার উপজেলা কৃষি অফিস, সিরাজদিখানে যোগাযোগ করলে এই জাতের আমের চারা পাওয়া যাবে।