প্রথমে কয়েকটা জনগুরুত্তপুর্ন ফ্যাক(FAQ)দিয়ে শুরু করি যাতে এই প্রশ্নগুলো রিপিট না হয়ঃ
১। কোথায় কোথায় যেতে পারবেন নাঃ বিদেশীদের জন্য নাথুলাপাস, বাবা মন্দির, গুরুদংমার, কালাপাথর যাবার পার্মিশন নাই। পিরিয়ড।
২। ইনার লাইন পার্মিট কোথা থেকে নিবেনঃ সিকিম যাবার ‘ইনার লাইন পার্মিট’ আইভ্যাকবিডি(IVACBD) থেকে অথবা শিলিগুরি জাংশনে এসএনটি(SNT-Sikkim National Transport) থেকে অথবা সিকিমে ঢোকার চেকপোস্ট রাংপো(Rangpo) থেকে নিতে পারবেন। আইভ্যাকবিডি(IVACBD) থেকে নিতে গেলে ৭-১৪ দিন সময় আর ৩০০ টাকা খরচ হবে। শিলিগুরি বা রাংপো থেকে নিলে ১০ মিনিট এই কাজ হবে এবং কোন টাকা লাগবে না। ইনার লাইন পার্মিট যেখান থেকেই নেন না কেন, রাংপো দিয়ে ঢোকার বা বেরোবার সময় অবশ্যই ‘ফরেনার রেজিস্ট্রেশন অফিসে’ নাম এন্ট্রি করে পাসপোর্টে সিল মেরে নিবেন(মাস্ট)। রাংপোতে চেকিং এর সময় আর্মি পারসনরা এ বিষয়ে কিছু বলবে না। তাই নিজ দায়িত্যে এন্ট্রি করে নিবেন।
৩। কতজনের গ্রুপ করে যাবেনঃ সিকিমে বেশিরভাগ যায়গায় ঘুরতে হয় গাড়ি নিয়ে (যেহেতু পাহাড়ি এলাকা, হেটে হেটে পোষায় না)। সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবার জন্য আলাদাভাবে পার্মিশন নিতে হয়। এই পার্মিশন নিতে হবে এজেন্সির মাধ্যমে। পার্মিশন নেবার পরেও আপনি বা আপনারা একা যেতে পারবেন না। সাথে একজন গাইড নিতে হবে। সো আপনি একজন হোন অথবা ৬ জন , একটা গাড়ির ভাড়া আপনাকে বহন করতে হবে। সিকিমের উচ্চবর্তী যে জায়গা গুলো আছে সেগুলোতে ছোট গাড়ি যেতে দেয় না। বড় গাড়ি নিতে হয়। এই গাড়িগুলোর সামনে এক সিট আর পিছনের দুই সারিতে ৩+৩=৬ সিট। মানে গাইডসহ ৭ জন সদস্য হলে গাড়ির সঠিক ব্যাবহার হবে। গাইডরা অনেকসময় ওই ৩ সিটে চারজন বসানোর কথা বলে। কিন্তু মোটা মোটা জামা পরে ৪ জন ওই ৩ সিটে বসে পাহারে ৩/৪ ঘন্টার জার্নী করা আমার কাছে ফিসিবল মনে হয় নাই। তাই খরচ বাচাতে চাইলে ৬ জনের গ্রুপ করে যাবেন। দেশ থেকেই গ্রুপ করে যাবেন। কেউ সিকিমে গিয়ে কোন গ্রুপের সাথে যুক্ত হবার প্লান করে যাবেন না। কারন দেশের বাইরে গ্রুপ হওয়া ঝামেলা ও সময় সাপেক্ষ। মনে রাখবেন আপনি শুধু ফরেনারদের সাথে গ্রুপ করতে হবে(বাংলাদেশি ব্যাতিত অন্য ফরেনাররা আসলে আপনাকে নিতে চাইবে না)। ইন্ডিয়ান্দের সাথে গ্রুপ করে যেতে পারবেন না।
৪। কোন বর্ডার দিয়ে যাবেনঃ আপনি ফুলবাড়ি(বাংলাবান্ধার অপজিট ইন্ডিয়ান পোর্ট) বা চ্যাংড়াবান্ধা যে পোর্ট দিয়েই এন্ট্রি করেন না কেন, শিলিগুরি হয়েই সিকিম যেতে হবে। ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন সেন্টার থেকে শিলিগুরি জাংশনের দূরত্ব ১২ কিমি আর চ্যাংড়াবান্ধা থেকে শিলিগুরি জাংশনের দূরত্ব ৮৩ কিমি। তাই যারা নতুন করে ভিসা করাবেন বা ভিসাতে পোর্ট এড করবেন তারা ফুলবাড়ি পোর্ট এড করাই বেটার। ভ্রমন সময় ও খরচ দুটোই বাচবে।
৫। ছবি এবং পাস্পোর্ট,ভিসা ও ইনার লাইন পার্মিট এর জেরক্সঃ ভ্রমন শুরুর পুর্বে প্রত্যেকে মিনিমাম ১০ কপি পাস্পোর্ট সাইজ ছবি এবং ১০ কপি করে পাস্পোর্ট, ভিসা ও ইনার লাইন পার্মিটের জেরক্স করে সাথে নিবেন। সিকিমে ইন্টারনাল পার্মিশনের জন্য এসব লাগবে।
এবার আসি আনুমানিক খরচসহ ট্যুর প্লানেঃ
গত ২৫/১২/২০১৮ থেকে ৩০/১২/১৮ পর্যন্ত সিকিম এ অবস্থান কালে আমাদের তথ্যের স্বল্পতার কারনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। এর সাথে অনেকেই আমাকে নক দিয়ে ট্যুরের বিভিন্ন তথ্য/ট্যুর প্লান চেয়েছেন। যেহেতু আমরা বেশিরভাগই স্বল্প খরচে ট্যুর সম্পন্ন করতে আগ্রহী, তাই এই লেখাটি লো বাজেট ট্রাভেলারদের জন্য। যাদের বাজেট নিয়ে সমস্যা নাই তারা ট্যুর প্লানটি নিয়ে নিজেদের মত ঘুরতে পারেন।
ধরে নিচ্ছি আপনাদের ৬ জনের গ্রুপ এবং সবার ভিসা ফুলবাড়ি পোর্ট দিয়ে করা।
ভ্রমন শুরুর পুর্বেই ইমিগ্রেশনে ঝামেলা এরানোর জন্য সোনালী ব্যাংক(মতিঝিল হেড অফিস বা নিউ মার্কেট শাখা) থেকে প্রত্যেকের ৫০০ টাকা করে ট্রাভেল ট্যাক্স পরিশোধ করে যাবেন। ট্রাভেল ট্যাক্স পরিশোদের জন্য সবাইকে যেতে হবে না। যেকোন একজন সবার পাস্পোর্টের ফটোকপি ও টাকা নিয়ে ব্যাংকে গেলেই হবে।
ভ্রমন শুরুর ৫ দিন আগেই ঢাকা-পঞ্চগড়গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস(ঢাকা থেকে রাত ৮ টায়) এর টিকেট কিনে ফেলবেন। শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫৫০ টাকা। ফেরার দিন ফিক্সড থাকলে ফিরতি টিকিটও(একতা এক্সপ্রেস- পঞ্চগড় থেকে রাত ৯ টায় ছাড়ে) কেটে ফেলুন। বাসেও যেতে পারেন। বাস তেতুলিয়া পর্যন্ত যায়। বাস ভেদে বিভিন্ন ভাড়া।
মনে রাখবেন, অনলাইনে ঢাকা-পঞ্চগড়ের টিকিট পাওয়া গেলেও পঞ্চগড়-ঢাকার টিকিট অনলাইনে পাওয়া যায় না।(পার্বতীপুর থেকে পাওয়া যায়। এই দুটি ট্রেনের ক্ষেত্রে পঞ্চগড় ডেস্টিনেশন যুক্ত হয়েছে রিসেন্ট। তাই এখনো অনলাইন হয় নাই।)।
এবার চলুন যাত্রা শুরু করি।
o দিন ০। রাতের পঞ্চগড়গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসে উঠে পরুন। সবকিছু ঠিক থাকলে ট্রেন পরদিন সকাল ৬:৩০ টায় পঞ্চগড় পৌছানোর কথা।
খরচঃ ৫৫০ টাকা(ট্রেন) + ৫০০ টাকা (ট্রাভেল ট্যাক্স)=১০৫০ টাকা
o দিন ১। ট্রেন থেকে নেমে অটোতে(১০ টাকা পার হেড) করে বাসস্ট্যান্ডে চলে যাবেন।
বাসস্ট্যান্ডে প্রতি ১৪ মিনিট পরপর বাংলাবান্ধার বাস ছাড়ে। বাস ভাড়া ৭০ টাকা প্রতিজন। বাস থেকে নেমে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন সেন্টার। এখানে ৪০.৬৯ টাকার একটা প্যাসেঞ্জার স্লিপ দিবে। সেটা পরিশোধ করবেন। এছাড়া স্লিপ ছাড়া কোন টাকা চাইলে দিবেন না । টাকা চাইলে স্লিপ চাইবেন। জেনে রাখা ভালঃ আপনি সরকারি নিয়ম অনুযায়ি বৈধভাবে টাকা ১০০০০ এবং ইউএসডি ৫০০০ সাথে রাখতে পারবেন ইন্ডিয়া ভ্রমনের সময়।
বাংলাদেশ পার্টের ইমিগ্রেশোনের কাজ শেষ হলে সোজা হেটে জিরো পয়েন্ট পার হয়ে ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশোনে চলে যাবেন। এখানেও প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে বের হয়ে যাবেন। ইন্ডিয়ান পার্টে কিছু টাকা দিতে হতে পারে । এরা আরো বড় ছ্যাঁচড়া।
ইমিগ্রেশন অফিসের উলটা পাসেই কিছু মানি এক্সচেঞ্জের দোকান আছে। আপনার বাংলা টাকা এখান থেকে রুপি করে নিন।(বাংলাদেশ থেকে যাবার সময় কারো কাছে ভারতীয় সিম থাকলে সংগ্রহ করে নিন। সিম না পেলে এখান থেকে একটা সিম কিনে নিন এবং একটা ভালো টকটাইম ও নেটওয়ার্কের প্যাকেজ এক্টিভেট করে নিন)
টাকা ভাঙ্গানো শেষে শিলিগুরি জাংশন পর্যন্ত একটা অটো ভাড়া করুন।ডিরেক্ট কেউ যেতে রাজি না হলে অটোতে করে ফুলবাড়ি বাজার পর্যন্ত চলে আসুন। দেন বাজার থেকে শীলিগুরি জাংশনের গাড়ি/অটো/ভটভটি পাবেন। পারহেড ৪০ রুপির মত খরচ হবে।
শিলিগুরি জাংশন এ পৌছে এসএনটি(*****://goo.gl/maps/YKxZukinUpr) তে যাবেন। ইনার লাইন পার্মিট বাংলাদেশ থেকে করা না থাকলে এখান থেকে করে ফেলতে পারেন।এখানে এক কপি ছবি , পাসপোর্ট ও ভিসার ১ কপি করে জেরক্স কপি দিতে হবে এবং ১ টা ফর্ম পুরন করতে হবে। এখানে কর্মরত ব্যাক্তিরা অনেক হেল্পফুল। পার্মিশন পেয়ে গেলে শেয়ার্ড জীপের টিকিট কেটে ফেলুন। ২৫০ রুপি করে টিকিট।বাসেও যাওয়া যায়। তবে বাসে অনেক সময় লাগে।
জীপে করে রওনা দেবার আগে বলে রাখবেন আপনারা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন এবং রাংপোতে কিছুক্ষন দারাতে হবে। রাংপো চেকপোস্টে পৌছালে আর্মিকে ইনার লাইন পার্মিট শো করুন এবং জীপ থেকে নেমে বাম পাশে ফরেনার রেজিস্ট্রেশন অফিসের দোতলায় গিয়ে এন্ট্রি করে পাস্পোর্টে সিল মেরে নিন। যারা ঢাকা অথবা শিলিগুরি থেকে ইনার লাইন পার্মিট নেননি তারা এখান থেকে তা সংগ্রহ করতে পারেন। প্রসিডিউর একি।
রাংপোতে কাজ শেষ হলে আবার জীপে করে সোজা গ্যাংটক। গ্যাংটকে নেমে প্রথমেই ইনার লাইন পার্মিটের ১০ কপি করে জেরক্স করে নিন।
যেহেতু আমরা লো বাজেট ট্রাভেলার তাই আমরা মোটামুটি ভালো মানের হোটেলে থাকবো। এমন একটা হোটেল নরইয়াং(Hotel Noryang)।পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হোটেল।এই হোটেল এর বড় সুবিধা হচ্ছে এটি গ্যাংটকের সেন্টার এমজি মার্গের একদম কাছে এবং এর মালিক খুবি সজ্জন মানুষ এবং পরিস্কার বাংলা জানেন, যদিও বাংগালী না। বলে রাখা ভাল গায়ক অর্নবের বন্ধু এই ভদ্রলোক শান্তি নিকেতনে পড়ালেখা করেছেন। অর্নবের সাথে একই মঞ্চে পারফর্মও করেছেন। পরে বিদেশ থেকে ইংলিশে পিএইচডি করে এসে সিকিমের মানিপল ইউনিভার্সিটিতে গেস্ট লেকচারার হিসেবে আছেন। ফোন নাম্বারঃ +৯১৩৫৯২২০২৫৪৫। হোয়াটসএপে আছে। সিকিম যাবার আগেই সিট খালি আছে কিনা যেনে নিতে পারেন। এখানে ডাবল বেডের ভাড়া নিবে ১০০০ রুপি।
হোটেল ঠিক হয়ে গেলে আপনাদের ঘুরাঘুরির জন্য এজেন্সির শরণাপন্ন হতে হবে। আর এজেন্সির ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে যোগাযোগ করতে পারেন সোনম ওরফে ম্যাজিক ম্যানের সাথে। খুব ভালো ছেলে। চোস্ত ইংলিশ বলে। ও আপনাদের সব ধরনের হেল্প করতে পারবে। ওকে আমরা বলেছি আমাদের বন্ধুরা বাংলাদেশ থেকে আসবে এবং তাদের কাছে শহরের সবচেয়ে ভালো ডিলটাই দিতে হবে। সোনমের ফোন নাম্বারঃ +৯১৮০০১৬৩০৪৭৫। ওকে ফোন দিয়ে বলবেন পরের দিন গ্যাংটকের আশেপাশে যে ১০ টা সাইট আছে সেগুলো ঘুরতে চান। তাহলে সে পরের দিন আপনাদের জন্য একটা গাড়ীর ব্যাবস্থা করে রাখবে। খরচ পরবেঃ ২৫০০-৩০০০ রুপি।
খরচঃ ১০+৭০+৪১=১২১ টাকা
৪০+২৫০+৫০০=৭৯০ রুপি
o দিন ২। সিকিমে ২য় দিন সকালে সাইট সিয়িং এ যাবার আগে পরের দিনের ইস্ট সিকিমে ছাঙ্গু লেকে ভ্রমনের পার্মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ সোনমকে দিয়ে দিন। সিকিমে বিদেশীদের ঘুরার নিয়ম হচ্ছে পরের দিন ঘুরার পার্মিশনের জন্য আগের দিন দুপুর ১ টার আগেই সকল কাগজ জমা দিতে হবে।
পার্মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজঃ
১) ৩ কপি ছবি
২) পাসপোর্ট ও ভিসার ২ কপি করে জেরক্সকপি
৩) ইনার লাইন পার্মিটের ১ কপি জেরক্স কপি
খরচঃ ৫০০(ঘুরাঘুরি)+৫০০(হোটেল)=১০০০ রুপী
o দিন ৩। সিকিমে ৩য় দিন সকালে সাঙ্গু লেক ভ্রমনের পুর্বে পরের দুই দিন ইয়ামথাং ভ্যালী ভ্রমনের পার্মিশনের জন্য কাগজ সোনমের কাছে জমা দিইয়ে যাবেন। সাঙ্গু লেক ভ্রমনের খরচ পরবে ৪৫০০-৫০০০ রুপী । ছাঙ্গু লেকে গেলে অবশ্যই রোপ কারে চরবেন। খরচ পরবে ৩২৫ রুপী।
খরচঃ ৮৬০(ঘুরাঘুরি)+ ৫০০(হোটেল) +৩২৫(রোপ কার)=১৬৮৫ রুপী
o দিন ৪ + ৫। সিকিমে ৪র্থ দিন নর্থ সিকিম ভ্রমণের পুর্বে হোটেল থেকে চেক আউট করতে হবে। কারন নর্থ সিকিমে ইয়ামথাং ভ্যালী ভ্রমণের জন্য এক রাত মাঝরাস্তায় লাচুং নামক গ্রামে কাটাতে হবে। এই প্যাকেজে ডিনার, ব্রেকফাস্ট ও হোটেলভারা ইঙ্কলুডেড থাকবে। টোটাল খরচ পরবে ১৯০০০-২০০০০ রুপী। নর্থ সিকিমে যাবার পথে বেশ কিছু ঝরনা ও সাইট সিয়িং পরবে। ভাগ্য ভালো থাকলে কাঞ্চনঝঙ্গার দেখা পেতে পারেন। ৫ম দিন ইয়ামথাং ভ্যালি ঘুরার পর একি রাস্তায় জিরো পয়েন্টো ঘুরে আস্তে পারেন। সেক্ষেত্রে ড্রাইভারকে অতিরিক্ত ৩০০০ রুপী দিতে হবে। তবে জিরো পয়েন্টে ঘুরার ডিসিশন নেবার পুর্বে অবশ্যই জেনে নিবেন জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত রাস্তা ক্লিয়ার আছে কিনা। কারন বছরের বেশীরভাগ সময় এই রাস্তা বরফে আচ্ছাদিত থাকে। ড্রাইভাররা বারবার যাবার জন্যে প্ররোচিত করবে। কিন্তু অর্ধেক রাস্তায় যেয়ে বলবে আর যাওয়া যাচ্ছে না। তাই আগেই কনফার্ম হয়ে নিবেন।
খরচঃ(জিরো পয়েন্ট বাদে) ৩৩৩৪(ইয়ামথাং ভ্যালী)+ ৫০০(৫ম দিন রাত হোটেল)=৩৮৩৪ রুপী
o দিন ৬। ষষ্ঠ দিন গ্যাংটক থেকে দেশের উদ্দেষ্যে ব্যাক করতে পারেন আবার কেউ ওয়েস্ট সিকিমে পেলিং ঘুরে একদিন পরে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। আকাশ ক্লিয়ার থাকলে পেলিং থেকে কাঞ্চনঝঙ্গার সবচেয়ে সুন্দর ভিউ দেখা যায়। পেলিং গ্যাংটক থেকে ফেরার পথে পরে। পেলিং এ যেতে কন পার্মিশোন লাগে না, কোন গাইডও লাগে না। পেলিং নিজেরা গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন। খরচ পরবে ৩৫০০ রুপী। যারা পেলিং যাবেন না তারা সকালে গ্যাংটকে শিলিগুরি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেয়ার্ড জীপের টিকিট কাটবেন। ভাড়া ২৫০ রুপী। ফেরার পথে যথারীতি রাংপোতে গাড়ি থামিয়ে ফরেইনার রেজিস্ট্রেশন অফিস থেকে পাসপোর্টে এক্সিট পাস নিয়ে নিন। শিলিগুরি পৌছে হাতে সময় থাকলে কসমস মল ও হংকং মার্কেট থেকে প্রয়োজনীয় শপিং করে নিতে পারেন। বিকাল ৩ টার মধ্যে ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন পর্যন্ত অটো রিজার্ভ করে নিন। ভাড়া পরবে ১৫০-২০০ রুপী। ফুলবাড়ি পৌছে যতদ্রুত ইমিগ্রেশন শেষ করে ৫ টার মাঝেই দেশে প্রবেশের চেষ্টা করবেন। দেশে প্রবেশ করে বাংলাবান্ধায় ইমিগ্রেশন এর কাজ শেষ করবেন। এখানে পুর্বের ন্যায় ৪০.৬৯ টাকা পরিশোধ করতে হবে। ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ হলে ইমিগ্রেশোন অফিসের সামন থেকেই পঞ্চগড়ের বাসে উঠে পরুন। দেড় থেকে দুই ঘন্টার মধ্যেই পঞ্চগড় বাসস্ট্যান্ডে পৌছে যাবেন। সেখান থেকে অটোতে করে স্টেশন। ট্রেন রাইট টাইম থাকলে রাত ৯ টার একতা এক্সপ্রেসে উঠে পড়ুন। সব ঠিক থাকলে ৭ম দিন সকাল ৬:৩০ টায় ঢাকা পৌছে যাবার কথা।
খরচঃ(পেলিং খরচ বাদে) ২৫০+৪০=২৯০ রুপী
৪১+৭০+১০+৫৫০=৬৭১ টাকা
সর্বমোট খরচঃ (১০৫০+ ১২১+৬৭১=)১৮৪২টাকা + ((৭৯০+১০০০+১৬৮৫+৩৮৩৪+২৯০=)৭৫৯৯ রুপী +২০০০ রুপী(৫ দিনে খাওয়া+ অন্যান্য)=৯৫৯৯ রুপী = )১১৫১৯ টাকা = ১৩৩৬১ টাকা
এখান থেকেও খরচ কমানো যায়, যদি ডাবল বেডে ৩ জন থাকতে পারেন (আমরা রুমের অভাবে একদিন এভাবে ছিলাম) আবার গাড়িতে ৩ জনের সিটে ৪ জন যেতে পারেন(ইন্ডিয়ানরা এভাবে যায়)। তবে এ ধরনের লম্বা ট্যুরে যেটা অল্মোস্ট রোডট্রিপ, সেখানে গাড়ীতে মোটামুটি রিলাক্সে না বসতে পারলে কস্ট হয়ে যাবে।
টিপসঃ
১। সিকিমে অনেক ঠান্ডা। গ্যাংটকের উপরের দিকে তাপমাত্রা মাইনাসে থাকে। যথেষ্ট পরিমান ঠান্ডা নিবারক পোষাক(মোটা অভারকোট, সোয়েটার, ইনার(থার্মাল), কানটুপি, গলাবন্ধ, হাতমোজা ইত্যাদি)নিবেন।
২। একটা ভালো কেডস পায়ে দিবেন। কেউ স্নিকার পরে মাইনাস তাপমাত্রায় বরফের মধ্যে বাহাদুরি দেখাতে যাবেন না।
৩। পানি যে ঠান্ডা পানিতে হাত দিতে ইচ্ছা নাও করতে পারে। লাইফ সেভিওর টয়লেট টিস্যু সাথে রাখবেন। প্রাকৃতিক কার্যাদি তো আর আটকায় রাখা যায় না। :P
৪। গ্যাংটকে দুইটা হালাল হোটেল আছে। জান্নাত হোটেল(লালবাজারে),খান আংকেল’স কিচেন।
৫। ইয়াম্থাং ভ্যালী ১৪০০০ ফিট উপরে সমুদ্রপৃষ্ট থেকে। হাই অল্টিচুড প্রব্লেমের কারনে অনেকের সমস্যা হতে পারে। তাই তারা সাথে প্যারাসিটামল ও বমির ঔষধ সাথে রাখবেন।
৬। সিকিম অনেক গুছানো ও ছিমছাম শহর। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না। সিকিমে প্রকাশ্যে ধুমপান নিষেধ।
৭। বাহাদুরী দেখাতে গিয়ে এমন কিছু করবেন না যা আমাদের বাংলাদেশীদের জন্যে দুর্নামের কারন হয়।
৮| শিলিগুরিতে দালালের খপ্পরে পরবেন না।