সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের মধ্যে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু সেতুটি চালু হয়েছিল ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকালে।
উত্তরবঙ্গকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্তকারী ‘বঙ্গবন্ধু সেতু’কে ‘যমুনা ব্রিজ’ হিসেবেই জানছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী গোটা বিশ্ব। ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রত্যয় নিয়ে ক্ষমতায় থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া শেখ হাসিনা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকলেও সেতুর নামটি গুগল ব্যবহারকারীদের ভাবিয়ে তুলেছে।
বিশাল যমুনা নদীর ওপর দিয়ে সেতু স্থাপনের আকাঙ্খা ছিল বহু দিনের। ১৯৪৯ সালে আবদুল হামিদ খান ভাসানী, ১৯৬৪ সালে রংপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ও ১৯৬৬ সালে রংপুর থেকে একই পরিষদের আরেকজন সদস্য শামসুল হক এই সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পেশ করেন।
১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে বেতার-টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণদানকালে শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচনী ওয়াদা হিসেবে যমুনা সেতু নির্মাণের কথা উত্থাপন করেন। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭২ সালে যমুনা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয় এবং ১৯৭২-৭৩ সালের বাজেটে এজন্য বরাদ্দ রাখা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সরকারের সময় নানা পদক্ষেপ গ্রহণের পর ১৯৮৫ সালে জুলাই মাসে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ বলে যমুনা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়। ১৯৮৬-৮৭ সালে সেতুর সম্ভাব্যতা-সমীক্ষায় দেখা যায়, একটি সড়ক-কাম-রেল-বিদ্যুৎ-গ্যাস লাইন পরিবাহী সেতু অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উভয় দিক থেকেই লাভজনক হবে। ১৯৯২ সালে আইডিএ, এডিবি ও জাপানের ওইসিএফ সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নে সম্মত হয়। ১৯৯৪ সালে সেতুর ভিত্তি প্রস্তর শেষে ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকল্পের ভৌত নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং গ্যাস সঞ্চালন লাইন ব্যতীত সব কাজ ১৯৯৮ সালের জুনের মধ্যে শেষ হয়।
সেতুটি নির্মাণে মোট খরচ হয় ৯৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইডিএ, এডিবি, জাপানের ওইসিএফ প্রত্যেকে ২২ শতাংশ পরিমাণ তহবিল সরবরাহ করে এবং বাকি ৩৪ শতাংশ ব্যয় বহন করে বাংলাদেশ।