You can also earn money by answering questions on this site Find out the details

Categories

Sister Links: -- Nishiddho--BDLove24--Cerapatabd ....
40 views
in সাধারণ by (-14 points)

1 Answer

0 like 0 dislike

হিউয়েন-সাং  সাত শতকের চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী। তিনি ভারত ও বাংলা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ লিখে গেছেন। এই বিখ্যাত বৌদ্ধ শাস্ত্রজ্ঞের নামের সঠিক উচ্চারণ সম্ভবত জুয়ানজ্যাং এবং তা হুয়ান-সাং হিসেবেও লেখা যায়। ৬০৩ খ্রিস্টাব্দে হেনান প্রদেশে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। খুব অল্প বয়সেই তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক ও আধ্যাত্মিক প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়। বাল্যকাল থেকেই তিনি ধর্মগ্রন্থ, বিশেষ করে চৈনিক ধ্রুপদী গ্রন্থসমূহ ও প্রাচীন জ্ঞানী লোকদের লেখা পাঠে আগ্রহী হন।

লুওইয়াং নগরে অবস্থানকালে হিউয়েন-সাং মাত্র তেরো বছর বয়সে বৌদ্ধ ভিক্ষু সম্প্রদায়ে প্রবেশ করেন। সুই রাজবংশের পতন-পরবর্তী রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে তিনি সিচুয়ানের (জিচুয়ান) জিংদু-তে চলে যান এবং সেখানে বিশ বছর বয়সে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তিনি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের সন্ধানে সমগ্র চীন ভ্রমণ করেন। অবশেষে তিনি তাং সম্রাট তাইজং-এর শান্তিপূর্ণ শাসনাধীন চ্যাংগান-এ পৌঁছান। এখানে এসেই হিউয়েন-সাং-এর ভারত ভ্রমণের অভিপ্রায় জাগ্রত হয়।  ফা-হিয়েন-এর ভারত ভ্রমণ সম্পর্কে তিনি অবহিত ছিলেন এবং তিনিও চীনে পৌঁছানো বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্রের অসম্পূর্ণতা ও ভুলব্যাখ্যা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন।

৬২৯ খ্রিস্টাব্দে চীন থেকে যাত্রা শুরু করে হিউয়েন-সাং উত্তরের বাণিজ্য পথ ধরে মধ্য-এশিয়ার কুচ হয়ে উত্তর ভারতে পৌঁছান। কনৌজ নগরে পৌঁছে তিনি মহান ভারতীয় সম্রাট হর্ষবর্ধনের আতিথ্য লাভ করেন। তিনি মগধের বিভিন্ন বৌদ্ধ তীর্থস্থান পরিদর্শন করেন এবং অনেক সময় তৎকালীন বিখ্যাত বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র  নালন্দা মহাবিহারে পড়াশোনায় অতিবাহিত করেন। এরপর তিনি বাংলার বিভিন্ন অংশ (পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্ব অংশ) এবং দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারত ভ্রমণ করে পুনরায় মধ্য এশিয়া হয়ে চীনে প্রত্যাবর্তন করেন। তবে ফেরার পথে তিনি খোটান হয়ে দক্ষিণ-পথ ধরে। হিউয়েন-সাং তাঁর ভ্রমণকৃত সব দেশের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছিলেন। তিনি তাঁর বিবরণে বিভিন্ন দেশের শ্রুতিনির্ভর তথ্যও অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন; যেমন- দক্ষিণ ভারতে অবস্থানকালে তিনি শ্রীলংকার কিছু তথ্য লিপিবদ্ধ করেন, যদিও তিনি এই দ্বীপ রাষ্ট্রটি ভ্রমণ করেন নি।

৬৪৫ খ্রিস্টাব্দে হিউয়েন-সাং চীনে প্রত্যাবর্তণ করলে তাঁকে বিপুল সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তখনও সিংহাসনে আসীন তাইজং তাঁকে বিভিন্ন উচ্চ পদে যোগদানের প্রস্তাব দেন, কিন্তু সব প্রস্তাবই তিনি ফিরিয়ে দেন। তিনি বরং ৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বৌদ্ধ রচনার অনুবাদে তাঁর সমস্ত সামর্থ্য ব্যয় করেন।

হিউয়েন-সাং-এর গ্রন্থ জিউ জি (সি-উ চি) মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের উপর সর্ববৃহৎ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ সম্বলিত গ্রন্থ। একজন চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী কর্তৃক প্রণীত গ্রন্থটি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৌদ্ধ গ্রন্থ সংগ্রহ ও বৌদ্ধ ধর্ম নির্দেশনায় ব্যুৎপত্তি অর্জন হিউয়েন-সাং-এর প্রধান উদ্দেশ্য হলেও ভারতে অবস্থানকালে তিনি অন্যান্য কাজও করেছেন। তিনি ভ্রমণকৃত বিভিন্ন অঞ্চলের রাজনৈতিক ও সামাজিক চিত্র সযত্নে সংগ্রহ করেছেন। বাংলায় ভ্রমণকৃত বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ছিল প্রধানত কর্ণসুবর্ণের নিকটবর্তী  রক্তমৃত্তিকাপুন্ড্রনগর ও এর সংলগ্ন এলাকা,  সমতট ও  তাম্রলিপ্তি। তাঁর বিবরণ বাংলার প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে ব্যাপক সহায়তা করে। কোথাও কোথাও তাঁর বিবরণ পক্ষপাতদোষে দুষ্ট হলেও সাত শতকের বাংলার ইতিহাস, বিশেষ করে  শশাঙ্কের শাসনাধীন গৌড় রাজ্য সম্বন্ধে তিনি আলোকপাত করে।

হিউয়েন-সাং ৬৫৭টি সংস্কৃত বৌদ্ধ গ্রন্থ সংগ্রহ ও অনুবাদ করেন। তৎকালীন ভারতের বৌদ্ধ শাস্ত্রের উপর সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষাই তিনি লাভ করতে সক্ষম হন। হিউয়েন-সাং-এর জীবনী জিউ জি-র সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে লিখিত হুইলি-র Life of Hiuen-Tsang, The Tripitaka Master of the Great Zi En Monastery-তে এসমস্ত কিছুই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবৃত হয়েছে। 

by Earnings: 2.48 Usd (2,411 points)

Related questions

-- Payment Method & Thresholds--Referral Program--Help--
-- FAQ --- Terms --DMCA ---Contact Us --
Language Version--English --Bengali ---Hindi ---
...