বিজ্ঞানী রন্টজেনের পুরো নাম ভিলহেল্ম কনরাড রন্টজেন।
একদা একসময় বিজ্ঞানী রন্টজেন একটা পরীক্ষা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তখন সময় কালটা ছিলো ১৯৯৫ সাল। পরীক্ষাটি ছিলো গতিশীল ইলেকট্রন কোন ধাতুতে আঘাত করলে সেখান থেকে এক প্রকার বিকিরণ উৎপন্ন করে। বিকিরণটা ছিলো উচ্চ ভেদন ক্ষমতা সম্পন্ন।
এটা কি ধরনের বিকিরণ তা বিজ্ঞানী রন্টজেন ও অন্যান্য বিজ্ঞানীরা জানতেন না। তাই এর নাম দিয়েছিলেন এক্স-রে। এ আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানী রন্টজেনকে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়। আর এ সময় কালটা ছিলো ১৯০১ সাল। বিজ্ঞানী রন্টজেন এর পুরো নাম উইলহেম কনরাড রন্টজেন।
সাধারণত এক্স-রে দুই ধরনেরঃ
১.কোমল এক্স-রে এবং
২.কঠিন এক্স-রে।
যখন এক্স-রে যন্ত্রে কম বিভব পার্থক্য প্রয়োগ করা হয় তখন যে বিকিরণ পাওয়া যায় তাকে কোমল এক্স-রে বলে।
আর যখন এ যন্ত্রে বেশি বিভব পার্থক্য প্রয়োগ করা হয় তখন যে বিকিরণ পাওয়া যায় তাকে কঠিন এক্স-রে বলে।
বিজ্ঞানী রন্টজেন যখন পরীক্ষাটি সম্পন্ন করেছিলেন তখন সেখানে একটি তড়িৎক্ষরণ নল ব্যবহার করেছিলেন। বিজ্ঞানী রন্টজেন তড়িৎক্ষরণ নলে ১০^-৩ mm পারদস্তম্ভ চাপ দেন এবং লক্ষ্য করেন কিছুটা দূরে থাকা বেরিয়াম প্লাটিনো সায়ানাইড দ্বারা আবৃত পর্দায় প্রতিপ্রভার সৃষ্টি হচ্ছে। এটা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই তিনি আবিষ্কার করেন যে এই নল থেকে ক্যাথোড বিকিরণ নলের দেয়ালে পড়লে এ রশ্নি সৃষ্টি হয়। এটারি নাম দেন তিনি এক্স-রে।
এক্স-রে এর ধর্মঃ
এই রশ্নি সবসময় সোজা পথে চলে।
এটি অধিকাংশ পদার্থ ভেদ করতে পারে।
তারিতচৌম্বক তরঙ্গের আওতাভুক্ত হচ্ছে এক্স-রে।
চৌম্বক দ্বারা এটি প্রভাবিত হয় না।
আলোর যেমন প্রতিফলন, প্রতিসরণ, ব্যাতিচার, অপবর্তন ও সমবর্তন হয় ঠিক তেমনি এক্স-রের ও।
এটির উপর কোন আধান প্রভাব ফেলে না।
এটা আয়ন সৃষ্টি কারী বিকিরণ তাই এটা গ্যাসের মধ্যে দিয়ে যাবার সময় গ্যাসকে আয়নিত করে।
এক্স-রের ব্যবহারঃ
এক্স-রের বিভিন্ন ব্যবহার রয়েছে। এ বিকিরণ গোয়েন্দার কাজে, শিল্প কারখানায় ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হয়।
গোয়েন্দার কাজে ব্যবহারঃ
চামড়ার থলে বা কাঠের কোন বাক্সে বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখলে তা এই বিকিরণ ব্যবহার করে বের করা যায়।
চোরাচালনে দ্রবাদি খুঁজে বের করতে ব্যবহার করা হয়।
কোন নিষিদ্ধ পণ্য লুকিয়ে রাখলে তা এই রশ্নি দ্বারা বের করা যেতে পারে।
শিল্পে ব্যবহারঃ
ঢালাইয়ে দোষ ত্রুটি থাকলে বা ধাতব পাতে গর্ত থাকলে তা নির্ণয় করা যায়।
কেলাস গঠন পরীক্ষায় এটি ব্যাবহৃত হয় এবং মনিকারেরা এর সাহায্যে নকল গহনা চিনে ন্যায়।
টফি বা লজেন্সে ক্ষতিকর কোনো কিছু মিশ্রিত হয়েছে কি না তা জানা যায়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যবহারঃ
প্রানীর হাড়ের কোন ত্রুটি হলো কি না তা জানা যায়।
ক্যান্সারের চিকিৎসায় ও সংক্রমণ বৃদ্ধির চিকিৎসায় ব্যাবহৃত হয়।
আলসার এবং দাঁতের আলসার নির্ণের কাজে ব্যবহার হয়।