স্মৃতিশক্তি হারানোর সঙ্গে সম্পর্কিত সাধারণ উপসর্গগুলি হল: পুরোনো বা সাম্প্রতিক ঘটনা ভুলে যাওয়া,চিন্তাশক্তির অবনতি,বিচারক্ষমতা হ্রাস পাওয়া,জটিল কার্যপ্রণালী বা পরপর ধাপ মনে রাখার সমস্যা।
কী কারণে হয়
চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, বংশ ও জিনগত, জীবনযাপনের ধরন এবং পরিবেশগত কারণে এই রোগ হতে পারে। এই রোগে একটি বিশেষ ধরনের প্রোটিন মস্তিষ্কের কোষে জমা হয়ে ক্ষতি সাধন করে এবং তা নষ্ট করে ফেলে। এসবের মূলে রয়েছে নন-এনজাইমেটিক গ্লাইকেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন অ্যান্ড প্রডাক্ট জমা হওয়া। এগুলো নিউরন এবং সেগুলোর আন্তসংযোগ নষ্ট করে দেয়। গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকলে ধীরগতিতে এবং বেশি থাকলে দ্রুতগতিতে এসব পরিবর্তন ঘটতে থাকে।
নির্ণয় যেভাবে
আলঝেইমারসের জন্য বিশেষ কোনো পরীক্ষা নেই। আলঝেইমারস রোগ মূলত লক্ষণ সমষ্টি দেখে ডায়াগনসিস করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় লক্ষণ প্রকট থাকে না এবং ধীরে ধীরে সেটা প্রকট হতে থাকে। রুটিন পরীক্ষার ফলাফল সাধারণত স্বাভাবিক থাকে। কিছু পরীক্ষায় মস্তিষ্কের বয়সজনিত ক্ষয়, কার্যক্ষমতার হ্রাস ধরা পড়তে পারে। তবে ডিমেনশিয়ার অন্যান্য কারণও খুঁজতে হবে। ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, হাইপারটেনশন ইত্যাদি এক বা একাধিক রোগ এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।
চিকিৎসা
কিছু ওষুধ রোগীর স্মৃতিশক্তি অল্প কিছুদিন ধরে রাখতে সাহায্য করে বটে, তবে সময়ের সঙ্গে কার্যকারিতা হ্রাস পায়। নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি একই সঙ্গে আলঝেইমারস রোগেও ভুগতে পারেন। সব রোগের সঙ্গে আলঝেইমারসের আশঙ্কা বিবেচনায় রেখে বয়স্ক রোগীদের চিকিৎসা করা প্রয়োজন।
কীভাবে পরিচর্যা করতে হবে
ওষুধের পাশাপাশি সেবা ও পরিচর্যা, ভালোবাসা, পারিবারিক, সামাজিক ও সাংগঠনিক সাহায্য প্রয়োজন হয়। এসব রোগীর মস্তিষ্ক স্মৃতিশক্তি হারালেও অনুধাবনের শক্তি, ইগো, সম্মানবোধ এবং ব্যক্তিত্ব হারান না। তিনি কোনো অবহেলা, অযত্ন বা দুর্ব্যবহার আশা করেন না। নিজের অক্ষমতার জন্য তিনি উৎকণ্ঠিত, উদ্বিগ্ন থাকেন এবং অসহায় বোধ করেন। তিনি একজন বিশ্বস্ত সাহায্যকারী সঙ্গী আশা করেন। প্রিয়জন থেকে দূরে থাকতে ও অপরিচিতকে ভয় পান। আর নাতি–নাতনিদের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কারণ, তাদের সেবাকে দাদা-দাদি খুবই পছন্দ করেন, বন্ধু হিসেবে মনে করেন, বিশ্বাস করেন এবং ভালোবাসেন।