একশ টাকা, পাঁচশ টাকা ও এক হাজার টাকার নোট লেনদেনের সময় নোটের প্রধান চারটি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যেমন— রং পরিবর্তনশীল কালি, অসমতল ছাপা, নিরাপত্তা সুতা ও জলছাপ সতর্কতার সঙ্গে পরখ করলে সহজেই আসল নোট চেনা যাবে। জাল নোট শনাক্তকারী যন্ত্রের সাহায্যেও নোট পরীক্ষা করা যায়।
রং পরিবর্তনশীল কালি : একশ টাকা, পাঁচশ টাকা ও এক হাজার টাকা মূল্যমানের নোটের ওপরের ডানদিকে কোনায় ইংরেজিতে লেখা নোটের মূল্যমান রং পরিবর্তনশীল কালিতে মুদ্রিত আছে। একশ ও এক হাজার টাকা মূল্যমানের নোট আস্তে আস্তে নাড়াচাড়া করলে নোটের মূল্যমান লেখাটি সোনালি হতে ক্রমেই সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয়। একইভাবে পাঁচশ টাকার নোটে ৫০০ মূল্যমান লেখাটি লালচে হতে পরিবর্তিত হয়ে সবুজ হয়। জাল নোটে ব্যবহৃত এ রং চকচক করলেও তা পরিবর্তিত হয় না।
অসমতল ছাপা : একশ টাকা, পাঁচশ টাকা ও এক হাজার টাকার নোটের সামনের ও পিছনের পিঠের ডিজাইন, মধ্যভাগের লেখা, নোটের মূল্যমান এবং সাতটি সমান্তরাল সরল রেখা আড়াআড়িভাবে মুদ্রিত আছে। হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঘষলে এসব ডিজাইন, লেখা ও রেখা অমসৃণ অর্থাৎ খসখসে অনুভূত হয়।
তাছাড়া নোটের ডান দিকে একশ টাকার নোটে তিনটি, পাঁচশ টাকার নোটে চারটি এবং এক হাজার টাকার নোটে পাঁচটি ছোট বৃত্তাকার ছাপ আছে, যা হাতের আঙ্গুলের স্পর্শে অসমতল অর্থাৎ উঁচু-নিচু বলে মনে হয়। এসব বৈশিষ্ট্য জাল নোটে সংযোজন করা সম্ভব নয়।
নিরাপত্তা সুতা : একশ টাকা, পাঁচশ টাকা ও এক হাজার টাকার নোটে মূল্যমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগোসংবলিত নিরাপত্তা সুতা রয়েছে। নোটের মূল্যমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো নিরাপত্তা সুতার চারটি স্থানে মুদ্রিত আছে। এ নিরাপত্তা সুতা অনেক মজবুত যা নোটের কাগজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নখের আঁচড়ে বা দুমড়েমুচড়ে নিরাপত্তা সুতা কোনোক্রমেই উঠানো সম্ভব নয়। জাল নোটে নিরাপত্তা সুতা সহজেই নখের আঁচড়ে উঠে যায়।
জলছাপ : একশ টাকা, পাঁচশ টাকা ও এক হাজার টাকার প্রত্যেক প্রকার নোটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নোটের মূল্যমান জলছাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নোটের মূল্যমান বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির তুলনায় উজ্জ্বল দেখায়।
নোট জাল করা ও জাল নোট ক্রয়-বিক্রয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে এ অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।