তাওয়াক্কুল হচ্ছে; কোনো কিছুর উপর নির্ভর করা বা কাউকে কোনো বিষয় সম্পন্ন করার ক্ষমতা রয়েছে মনে কের দায়িত্ব অর্পন করা।
তাওয়াক্কুল চার প্রকার:
(ক) বিপদ-আপদে সর্বাবস্থায়ই আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা। কেননা শুধুমাত্র আল্লাহই বিপদ দূর করে কল্যাণ এনে দিতে পারেন। আর এটা করা ওয়াজিব এবং ঈমানের শর্ত।
(খ) সৃষ্ট জীবের উপর এমন বিষয়ে তাওয়াক্কুল করা যা সংঘটিত করার ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই। যেমন; মৃত ও অনুপস্থিত এবং এ ধরনের অন্যান্য তাগুতদের উপর ভরসা করা। অতঃপর প্রয়োজনের কথা তাদেরকে বলা, সাহায্য প্রার্থনা, রিযিকের জন্য ফরিয়াদ করা অথবা হেফাযতের আবেদন নিবেদন করা। এধরনের কার্যকলাপ তাওহীদ (একত্ববাদ) পরিপন্থী বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত।
(গ) জীবিত উপস্থিতদের উপর তাওয়াক্কুল করা; যেমন, আমীর-উমারা, রাষ্ট্রনায়ক ইত্যাদি যাদেরকে আল্লাহ ধন-সম্পদের অধিকারী করেছেন সৃষ্টিজীবের দুঃখ কষ্ট দূরীকরণের উপায়-উপকরণ ইত্যাদি দান করেছেন। এদের কারো উপর তাওয়াক্কুল ছোট শির্কের অন্তর্ভুক্ত হবে।
(ঘ) কোনো ব্যক্তিকে উকিল বা প্রতিনিধি নির্ধারণ করা। আর তা এমন বিষয়ে হতে হবে যা ঐ প্রতিনিধির নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে সমপন্ন করতে সক্ষম; যেমন: ক্রয়-বিক্রয়, ভাড়া দেওয়া-নেওয়া ইত্যাদি। এ প্রকারের তাওয়াক্কুল বা নির্ভরতা জায়েয। তবে উকিল বা প্রতিনিধিকে দায়িত্ব অর্পণের সময় ‘‘আমি কোনো ব্যক্তি বিশেষের উপর তাওয়াক্কুল করলাম’’ বলা যাবে না। বরং বলতে হবে আমি অমুককে আমার পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য প্রতিনিধি করলাম। কেননা যিনি যাকেই দায়িত্ব দিয়ে প্রতিনিধি করবেন তাকে অবশ্যই সার্বিক ব্যাপারে মহান পবিত্র আল্লাহর উপরই তাওয়াক্কুল বা নির্ভর করতে হবে।
[আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১৪৪।]