জাবেদা হচ্ছে হিসাবচক্রের প্রথম স্তর। হিসাব-নিকাশের যে প্রাথমিক বইতে দৈনন্দিন সংগটিত লেনদেনসমূহ চিহ্নিত করে ডেভিট ক্রেডিটে বিশ্লেষণ করে তারিখের ক্রমানুসারে প্রতিদিন লিপিবদ্ধ করা হয়, তাকে জাবেদা বলে।
জাবেদা হিসাব ২ প্রকার, যথাঃ
১. ব্যক্তি বাচক হিসাব : দেনাদার, পাওনাদার, ব্যাংক ইত্যাদি। (জাবেদা দাখিলা - যে পায়/গ্রহিতা হিসাব---ডেঃ, যে দেয়/দাতা হিসাব___ক্রেঃ);
২. অব্যক্তি বাচক হিসাব।
ব্যক্তিবাচক হিসাব আবার ২ প্রকার।
(ক) সম্পত্তি বাচক হিসাব: নগদান, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, বিনিয়োগ, ক্রয়, বিক্রয় ভূমী ও দালানকোঠা ইত্যাদি।। (জাবেদা দাখিলা ঃ যা আসা সম্পত্তি/আসলে ---ডেঃ, সম্পত্তি চলে গেলে-ক্রেঃ )
(খ). নামিক/আয় বাচক হিসাব:মজুরি, কমিশন, বেতন, ভাড়া ইত্যাদি। (জাবেদা দাখিলা ঃ সমস্ত লোকসান/ব্যায়-ডেঃ, সমস্ত লাভ/আয়---ক্রেঃ)
............................................
হিসাবচক্রের তৃতীয় ধাপ হলো জাবেদা। সাধারণত প্রতিষ্ঠানের লেনদেন লিপিবদ্ধ করার জন্য জাবেদা প্রস্তুত করা হয়।জাবেদা ২ প্রকার; ১-বিশেষ জাবেদা, ২-প্রকৃত জাবেদা।
বিশেষ জাবেদা
বিশেষ জাবেদা ৬ প্রকারঃ ১-ক্রয় জাবেদা- এই জাবেদায় প্রতিষ্ঠানের সকল বাকিতে পণ্য ক্রয় এর হিসাব লিখা হয়
২-বিক্রয় জাবেদা-এই জাবেদায় প্রতিষ্ঠানের সকল বাকিতে পণ্য বিক্রয় এর হিসাব লিখা হয়।
৩-ক্রয় ফেরত জাবেদা- বাকিতে ক্রয়কৃত পণ্য ফেরত পাওয়া হলে ক্রয় ফেরত জাবেদায় হিসাব গুলো লিখা হয়।
৪-বিক্রয় ফেরত জাবেদা- বাকিতে বিক্রয়কৃত পন্য ফেরত পাওয়া গেলে তার হিসাব লিখা হয়।
৫-নগদ প্রাপ্তি জাবেদা- যে সকল লেনদেন দ্বারা নগদ প্রাপ্তি ঘটে বা নগদে টাকা পাওয়া যায় টা এই হিসাবে লিখা হয়।
৬-নগদ প্রদান জাবেদা-যে সকল লেনদেন নগদে প্রদান করা হয় টা এই হিসাবে লিখা হয়।
ব্যবসায়ের প্রায় সমস্ত লেনদেন বিশেষ জাবেদায় লিখা হয়।
প্রকৃত জাবেদা
প্রকৃত জাবেদা ৫ ধরণের। ১- সংশোধনী জাবেদা, ২-সমন্বয় জাবেদা, ৩-সমাপনী জাবেদা, ৪- প্রারম্ভিক জাবেদা,৫-অন্যান্য জাবেদা।
জাবেদায় যা যা লিখতে হয় টা হলো , তারিখঃ এই কলামে লেনদেন সংঘটিত হওয়ার তারিখ,বছর বা মাস লিখতে হবে। বিবরণঃ এই কলামে লেনদেনের সাথে জড়িত ডেবিট ও ক্রেডিট পক্ষ/হিসাব লিখা থাকে। সর্বদা ডেবিট পক্ষ প্রথমে এবং ক্রেডিট পক্ষ দ্বিতীয় লাইনে লিখা হয়। খতিয়ান পৃষ্ঠাঃ এই কলামে কিছু লিখার প্রয়োজন নেই। ডেবিট ও ক্রেডিট টাকাঃ এটির জন্য ২ টি কলাম হবে, ডেবিট টাকা ও ক্রেডিট টাকা। ডেবিট টাকার কলামে ডেবিট হিসাবের টাকা ও ক্রেডিট টাকার কলামে ক্রেডিট হিসাবের টাকা লিখা হয়। প্রতিটি জাবেদা লিখন সম্পন্ন করে বিবরণের ঘরে একটি রেখা টানতে হবে।
প্রতিটি সাধারণ জাবেদার জন্য ৫ টি কলাম টানতে হয়। সাধারণ জাবেদা প্রায় হিসাবের জন্য ব্যবহার করা হয়। ক্রয় জাবেদার জন্য ৬ টি কলাম টানতে হয় তারিখ,ক্রেডিত হিসাব খাত,শর্ত,চালান নম্বর,সূত্ত্র, শেষের কলামে ক্রয় হিসাব ডেবিট প্রথমে এবং দ্বিতীয় লাইনে পাওনাদার হিসাব ক্রেডিট। বিক্রয় জাবেদায় ৫ টি কলাম টানতে হয়, তারিখ,ডেবিট হিসাব খাত,চালান নম্বর,সূত্ত্র, শেষের কলামে প্রথমে দেনাদার হিসাব ডেবিট দ্বিতীয় লাইনে বিক্রয় হিসাব ক্রেডিট।
সারসংক্ষেপঃ
জাবেদা লেনদেনের হিসাবের সুবিধার জন্য লিখা হয়। লেনদেনে ভূল ত্রুটি শুদ্ধ করার জাবেদা করা হয়।