চট্টগ্রামে পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের বংশধররা ফিরিঙ্গি নামে পরিচিত।
পোর্তো গ্রান্দে দি বেঙ্গলা বা ইংরেজিতে গ্র্যান্ড পোর্ট অফ বেঙ্গল হয়ে পোর্তো গ্র্যান্ডে যা মুলত ১৬'শ এবং ১৭'শ শতকের সময়ে চট্টগ্রামে পর্তুগিজ উপনিবেশ (ইংরেজি: Portuguese settlement in Chittagong) অর্থাৎ চট্টগ্রামে পর্তুগিজ বনিক এবং নৌ উপনিবেশকে নির্দেশ করে। বঙ্গোপসাগরের এই অন্যতম বাণিজ্যিক অঞ্চলটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠির উপনিবেশ ছিল। পর্তুগিজরা ১৫২৮ সালের দিকে চট্টগ্রামে প্রথম আসে এবং মুঘল বিজয়ের পরে ১৬৬৬ সালে চলে যায়। এটি ছিল বাংলার ঐতিহাসিক অঞ্চল যেখানে প্রথম ইউরোপীরা উপনিবেশিক ছিটমহল স্থাপন করে।
চট্টগ্রাম ছিল বাংলার সালতানাতের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর, যাকে ফার্সী ও বাংলায় "শাহী বাংলা" নামে অভিহিত করা হতো। পর্তুগিজরা বন্দর নগরীটিকে পোর্তো গ্র্যান্ডে দে বেঙ্গালা বলে উল্লেখ করে, যার অর্থ "বাংলার বৃহৎ পোতাশ্রায়"। শব্দটি প্রায়শই পোর্তো গ্র্যান্ড হিসাবে সরল করা হত।
কিছু সূত্র ইঙ্গিত দেয় যে জোয়াওঁ কোয়েলহো চট্টগ্রামে এসেছিলেন জোয়াওঁ দা সিলভিয়ের আগে। অনেক মালাকান পর্তুগিজ মুরিশ জাহাজে ব্যবসায়ী হিসাবে সিলভিয়ের আগে বাংলায় এসেছিল। অধিকন্তু, কিছু পর্তুগিজ ১৫১৫ সালে পিপলিতে (বর্তমান ওড়িশায়) বসতি স্থাপন করেছিল এবং পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ করেছিল।
চট্টগ্রামে পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের বংশধররা ফিরিঙ্গি নামে পরিচিত। তারা পুরান চট্টগ্রামের পাথরঘাট্টা ও ফিরিঙ্গি বাজার অঞ্চলে বাস করে। বাংলা ভাষায় প্রচুর পর্তুগিজ শব্দ রয়েছে। বিশেষত এটা দেখা যায় চাঁটগাঁইয়া বাঙলায়। পর্তুগিজরা বিশেষত লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল উপনিবেশ থেকে প্রচুর বিদেশী ফল, ফুল এবং গাছপালা নিয়ে এসেছিল। তারা বাংলায় মরিচ, ডেলোনিক্স রেজিয়া, পেয়ারা, আনারস, পেঁপে এবং আলফোনসো আম নিয়ে আসে।
ব্রিটিশ কলকাতায় পর্তুগিজ ধর্মপ্রচারক মানুয়েল দি আসুম্পাসাও বাংলা ব্যাকরণের উপর প্রথম বই প্রকাশ করেছিলেন। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম গীর্জাগুলি ১৬ম শতাব্দীতে চট্টগ্রাম থেকে আগত পর্তুগিজ মিশনারীদের দ্বারা সূত্রপাত হয়েছিল। বেশিরভাগ বাংলাদেশী খ্রিস্টানদের পর্তুগিজ উপাধি রয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে পর্তুগাল ১৯৭৪ সালের ২০ ডিসেম্বর কার্নেশন বিপ্লব অনুসরণ করার পরে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।