বিভক্তি যোগের নিয়ম
১. অপ্রাণী বা ইতর প্রাণিবাচক শব্দের বহুবচনে -গুলি, -গুলো যুক্ত হয়। যেমন- পাথরগুলো, গরুগুলি।
২. অপ্রাণীবাচক শব্দের উত্তরে শূণ্য বিভক্তি হয়। যেমন- কলম দাও।
৩. স্বরান্ত শব্দের উত্তর -এ বিভক্তির রূপ হয় -য় বা -য়ে। -এ স্থানে -তে বিভক্তিও যুক্ত হতে পারে। যেমন- মা + এ = মায়ে, ঘোড়া + এ = ঘোড়ায়, পানি + তে = পানিতে।
৪. অ-কারান্ত ও ব্যঞ্জনান্ত শব্দের উত্তর প্রায়ই -রা স্থানে -এরা হয় এবং ষষ্ঠী বিভক্তির -র স্থলে -এর যুক্ত হয়। যেমন- লোক + রা = লোকেরা, বিদ্বান (ব্যঞ্জনান্ত) + রা = বিদ্বানেরা, মানুষ + এর = মানুষের। কিন্তু অ-কারান্ত, আ-কারান্ত এবং এ-কারান্ত খাঁটি বাংলা শব্দের ষষ্ঠীর একবচনে সাধারণত -র যুক্ত হয়, -এর যুক্ত হয় না। যেমন- বড়র, মামার, ছেলের।
৫. সাধারণত ক্রিয়ার স্থান, কাল, ভার বোঝাতে -এ, -তে, -য়, -য়ে ইত্যাদি বিভক্তির ব্যবহার হয়। কখনো কখনো বাক্যের কর্তার সঙ্গেও এসব বিভক্তি বসে।
৬. যেসব শব্দের শেষে কারচিহ্ন নেই, সেসব শব্দের সঙ্গে -এ বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন– সকালে, দিনাজপুরে, ই-মেইলে, কম্পিউটারে, ছাগলে, তিলে ইত্যাদি।
৭. শব্দের শেষে ই-কার ও উ-কার থাকলে -তে বিভক্তি হয়। যেমন - হাতিতে, রাত্রিতে, মধুতে, ইত্যাদি।
৮. আ-কারান্ত শব্দের শেষে য় বিভক্তি হয়। যেমন ঘোড়ায়, সন্ধ্যায় ঢাকায় ইত্যাদি।
৯. শব্দের শেষে দ্বিস্তর থাকলে যে বিভক্তি হয়। যেমন- ছইয়ে ভাইয়ে, বউয়ে।
১০. ই-কারান্ত শব্দের শেষেও -যে বিভক্তি দেখা যায়। যেমন- ঝিয়ে, ঘিয়ে।
১১. বাক্যে গৌণকর্মের সঙ্গে সাধারণত এক এবং -এরে বিভক্তি বসে। ক্রিয়াকে 'কাকে' প্রশ্ন করলে যে শব্দ পাওয়া যায় তার সঙ্গে এই বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন- শিশুকে, দরিদ্রকে, আমাকে, আমারে ইত্যাদি।
১১. বাক্যের মধ্যে পরবর্তী শব্দের সঙ্গে সম্বন্ধ বোঝাতে পূর্ববর্তী শব্দের সঙ্গে -র, -এর এবং-য়ের বিভক্তি যুক্ত হয়। সাধারণত আ-কারান্ত, ই/ঈ-কারান্ত ও উ/ঊ-কারান্ত শব্দের শেষে -র বিভক্তি বসে। যেমন – রাজার প্রজার, হাতির, বুদ্ধিজীবীর, তনুর, বধূর।
১২. যেসব শব্দের শেষে কারচিহ্ন নেই, সেসব শব্দের শেষে -এর বিভক্তি হয়। যেমন- বলের, শব্দের, নজরুলের, সাতাশের ইত্যাদি।
১৩. শব্দের শেষে দ্বিস্বর থাকলে -য়ের বিভক্তি হয়। যেমন – ভাইয়ের, বইয়ের, লাউয়ের, মৌয়ের ইত্যাদি।