‘অসহযোগ’ ও ‘অহিংসা’- এ দুটি প্রত্যয় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে যুক্ত। রাজনৈতিকভাবে এ দুটি প্রত্যয় আগে ব্যবহৃত হয়েছে কিনা জানা যায় না, অসহযোগ কোনো কোনো ক্ষেত্রে থেকে পারে, অহিংসা নয়। মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ ব্যবহার করেছেন রাজনীতিতে ১৯২০ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত, তবে অসহযোগের ভিত্তি সবসময় রাখতে চেয়েছেন অহিংস। শেষোক্ত প্রত্যয়টির উদ্ভব তার ধর্ম বিশ্বাস থেকে। তিনি জৈনধর্ম বিশ্বাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এ ধর্মে কোনো জীবহত্যা অধর্ম। অহিংসা প্রত্যয়টি তিনি প্রথম ব্যবহার করেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। শাসক অত্যাচার করবে সেটির প্রতিবাদ সহিংস হবে না, নির্যাতন সহ্য করে এর অসারতা প্রমাণ করতে হবে। যিশুর বাণীও তা-ই ছিল। গান্ধীজির মতে, ‘অহিংসার অর্থ অন্যায়কারীর নিকট নতি স্বীকার নয়। অহিংসার অর্থ স্বৈরাচারী ইচ্ছাশক্তির বিরুদ্ধে নির্যাতিতের সমগ্র আত্মার বোধকে উত্থিত করা।’
গান্ধীজি কংগ্রেসে যোগ দেন ১৯১৪ সালে। আবেদন-নিবেদনের রাজনীতির তখন ধারক-বাহক কংগ্রেস। ১৯১৯ সালে পাঞ্জাবের জালিওয়ানবাগে হত্যাকাণ্ড ঘটান ব্রিটিশ জেনারেল ডায়ার। এই অকথ্য হত্যাকাণ্ড ও অত্যাচার তদন্তে হান্টারের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করা হয়। হান্টার কমিশন ১৯২০ সালে যে রিপোর্ট প্রদান করে তাতে ডায়ার বা তার সহযোগীদের দায়ী করা হয়নি। অন্যদিকে একই সময়ে তুরস্কেও খিলাফতের অবসান ঘটে।
১৯২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর কংগ্রেস কমিটির অধিবেশন হয় কলকাতায়। লালা লাজপত রায় এতে সভাপতি নির্বাচিত হন। সেই কংগ্রেসের প্রস্তাবে বলা হয় যেসব অন্যায় সাধিত হয়েছে তার প্রতিবিধান এবং স্বরাজ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত অহিংস-অসহযোগ আন্দোলন ছাড়া গতি নেই।