বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় আম। একসময় শুধু রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে হিমসাগর, গোপালভোগ, ল্যাংড়া ও ফজলি আমের ওপর দেশের চাষীরা নির্ভরশীল ছিলেন। এক যুগ আগে আম্রপালি আমের উদ্ভাবন আম চাষের সব ভৌগোলিক বাধা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এখন দেশের মোট উৎপাদিত আমের ৪০ শতাংশ এই জাতের। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে আম্রপালির চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে। তবে সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচুর আম হয়। এমনকি পাহাড়ি এলাকা থেকে শুরু করে লবণাক্ত অঞ্চল, অনাবাদি সিলেটসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যদিকে আমকে দীর্ঘ সময় ভোগ করার জন্য বাণিজ্যিক বাগান করার সময় আগাম, মধ্যম ও নাবি জাতের বিষয়গুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। যেমন আগাম জাতের মধ্যে নীলউদ্দিন, গোলাপবাস, গোলাপখাস, রাজবৈশাখী, বৈশাখী, গোবিন্দভোগ আমচাষীদের আগাম ভালো বাজারমূল্য দিচ্ছে। আমের ক্ষেত্রে গৌড়মতি, বারি আম-৪-এর মতো নাবি জাতগুলো আগস্ট-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আম প্রাপ্তির সময়কে দীর্ঘায়িত করেছে। আম্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা, গৌড়মতি, বারি আম-৪, বারি আম-১০, ব্যানানা ম্যাংগো, ডায়াবেটিক আম ফল বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। পরিকল্পনা করে আমের সঠিক জাত নির্বাচন করে আমবাগান করলে বছরে সাত মাস ধরে বাগানে আম পাওয়া সম্ভব। বাঙালিদের এ ঐতিহ্যবাহী ফলকে টিকিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগসহ আরো কৃষি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশবিদ্যালয়সহ আরো অন্যান্য বিশবিদ্যালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।