রক্তশূন্যতা বলতে সবাই আয়রন বা লৌহ উপাদানের অভাবের কারণকে বোঝেন। কিন্তু নানা কারণেই রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
রক্তের লোহিতকণিকার হিমোগ্লোবিন তৈরিতে শরীর আয়রন ব্যবহার করে থাকে। আয়রনের মতো ভিটামিন বি–১২ ও ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি হলেও রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। একে বলে মেগালোব্লাস্টিক অ্যানিমিয়া। এর কারণে লোহিতকণিকা পরিপক্ব হতে পারে না। ফলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
কারণ
খাদ্যে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি–১২ ও ফলিক অ্যাসিড না থাকলে মেগালোব্লাস্টিক অ্যানিমিয়া হতে পারে। পাকস্থলীতে অস্ত্রোপচারের পর, অন্ত্রের পরিশোষণজনিত সমস্যাসহ আরও কিছু বিশেষ রোগেও এটা হতে পারে। দীর্ঘদিন ওমিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল জাতীয় অ্যাসিডিটির ওষুধ খেলেও মেগালোব্লাস্টিক অ্যানিমিয়া হতে পারে। এ সমস্যার আরেকটি কারণ, গর্ভাবস্থায় ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি। ডায়াবেটিসের ওষুধ মেটফরমিন দীর্ঘ মেয়াদে খেলেও এ রোগ হতে পারে।
লক্ষণ
ফ্যাকাশে ভাব, মাথা ঘোরা, মাথা ধরা, শরীর দুর্বল লাগা, অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা, বুকে ব্যথা হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকে। ডায়রিয়া, জিহ্বার প্রদাহ, হাত ও পায়ে ঝিঁঝি ধরা, বোধশূন্যতা, এমনকি মাংসপেশির কর্মক্ষমতাও নষ্ট হতে পারে।
চিকিৎসা
মেগালোব্লাস্টিক অ্যানিমিয়ার চিকিৎসা হলো প্রয়োজনীয় উপাদান দুটির অভাব পূরণ। ভিটামিন বি–১২ সাধারণত ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। মুখে খাওয়ার ওষুধও দেওয়া যায়। সেই সঙ্গে ভিটামিন বি–১২ ও ফলিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেয়ে এগুলোর অভাব দূর করা যায়। ডিম, দুধ, গরু ও খাসির মাংস, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদিতে ভিটামিন বি–১২ বেশি পাওয়া যায়। ফলিক অ্যাসিড বেশি থাকে শিম, বিট, সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, বাদাম, গরু-খাসির কলিজা ইত্যাদিতে।
রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল