অস্থায়ী সরকারকে শপথ বাক্য পাঠ করান- অধ্যাপক ইউসুফ আলী (১৭ এপ্রিল)
ইউসুফ আলী (জন্ম: ১৯২৩ - মৃত্যু: ১৯৯৮) স্বাধীনতার সনদ পাঠক, মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ ও পু্নর্বাসন দপ্তরের প্রধান এবং স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি (১৯৭২-৭৬) ছিলেন।
পাকিস্তান আমলে ১৯৬৫ সালে তিনি এমএনএ ছিলেন। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু সরকার, পরবর্তী খন্দকার মোশতাক আহমেদ সরকার, জিয়াউর রহমান সরকার এবং এরশাদ সরকারসহ পর্যায়ক্রমে চারটি ভিন্ন ভিন্ন সরকারের শিক্ষা, সমাজ কল্যাণ, বস্ত্র ও ত্রাণ প্রভৃতি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীহিশেবে প্রায় দশবার মন্ত্রীত্বের শপথ গ্রহণ করেন। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের পাতায় এ এক বিরল দৃষ্টান্ত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও পরিচালকের ভূমিকায় দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য তিনি প্রশংসিত হন। ওপার রাষ্ট্রে অগণিত শরনার্থীদের ত্রাণ বিভাগের পরিচালনার ভার ছিল তারই দায়িত্বে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওপার রাষ্ট্রে গঠিত প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতা সনদ পাঠ করে অসাধারণ খ্যাতির অধিকারী হন। মুজিবনগর অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রীগণকেও তিনিই শপথবাক্য পাঠ করান। ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত বিনয়ী, সাদাসিধে, মিষ্টভাষী, নিরংহকারী ও লোকপ্রিয়তার স্পর্শে মানুষের হৃদয় জয় করেন। শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে নশিপুরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-এর ভিত্তি স্থাপন করেন তিনি। বস্ত্রমন্ত্রী রূপে টেক্সটাইল মিল স্থাপন এবং এরশাদের আমলের মন্ত্রিত্বকালে তারই চেষ্টায় পূনর্ভবা নদীর উপর কাঞ্চন সেতু নির্মিত হয়। যে সেতুটির দাবী এলাকাবাসীর প্রায় ৫০ বছরের স্বপ্ন ছিল।
রাজনৈতিক জীবন
ইউসুফ আলী অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের যুব লিগ নিয়ন্ত্রণ পরিষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তার আগে বাংলাদেশ গণপরিষদের স্পিকার হিসেবে মহান স্বাধীনতার সনদ পাঠ করেন এবং ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। অধ্যাপক ইউসুফ আলী বাকশাল (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ) গঠিত হলে জাতীয় শ্রমিক লীগের প্রধান হন। মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর মোশতাক সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী হন। পরে আওয়ামী লীগের (মিজান) সাধারণ সম্পাদক হন। অধ্যাপক ইউসুফ আলী বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে (২০.৮.১৯৭৫ থেকে ৯.১১.১৯৭৫) পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।