প্রকৃতির শেষে যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, তাদের প্রত্যয় বলে। যেমন—চল+অন্ত = চলন্ত, ঢাকা+আই = ঢাকাই।
প্রত্যয় দুই প্রকার যথা: ১। কৃৎ প্রত্যয় ও ২। তদ্ধিত প্রত্যয়।
কৃৎ প্রত্যয়: ক্রিয়া প্রকৃতি বা ধাতুর শেষে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, তাকে কৃৎপ্রত্যয় বলে। যেমন—নাচ্+অন = নাচন।
তদ্ধিত প্রত্যয়: শব্দ বা নাম প্রকৃতির শেষে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে যে নতুন শব্দ গঠন করে, তাকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে। যেমন—ঢাকা+আই = ঢাকাই।
প্রশ্ন: বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা আছে কি?
উত্তর: বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা: মানুষের ভাব প্রকাশের প্রধান ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে ভাষা। একমাত্র ভাষাই তার মনের কথাকে সুন্দর ও সম্পূর্ণ করে প্রকাশ করতে সক্ষম। আর এ কাজে ভাষাকে সাহায্য করে তার শব্দসম্ভার। সে জন্য যে ভাষার শব্দভান্ডার যত সমৃদ্ধ, সে ভাষার প্রকাশ ক্ষমতাও তত বেশি। বাংলা ভাষার শব্দ গঠনের যেসব পদ্ধতি বা নিয়ম আছে, প্রত্যয় তার মধ্যে অন্যতম। প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রত্যয় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি করে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। যেমন—মিশ্-এর সঙ্গে ‘উক’ প্রত্যয় যুক্ত করলে গঠিত হবে ‘মিশুক’। এই নতুন শব্দটি, মেঘ শব্দের সঙ্গে ‘লা’ প্রত্যয় যোগ করলে পাওয়া যাবে ‘মেঘলা’ শব্দটি। এমনিভাবে কৃৎ ও তদ্ধিত প্রত্যয় দ্বারা নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি হয়ে বাংলা শব্দভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। সুতরাং বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।