You can also earn money by answering questions on this site Find out the details

Categories

Sister Links: -- Nishiddho--BDLove24--Cerapatabd ....
955 views
in সাধারণ by (-14 points)

1 Answer

0 like 0 dislike
মাহাতোরা অগ্রহায়ন মাসে বিয়ে করে না .
মাহাতো বাংলাদেশ, নেপাল, মরিশাস ও ভারতে বসবাসকারী অন্যতম প্রাচীন জাতিগোষ্ঠী। অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মত মাহাতোদেরও রয়েছে নিজেস্ব ভাষা ও পরিচিতি, সামাজিক রীতি-নীতি, আচার ও কৃষ্টিকালচার, বর্ণ পরিচয় এবং সামাজিক বৈচিত্রতা যা তাদেরকে একটি নিজেস্ব জাতিসত্ত্বা হিসেবে পরিচিতি দান করেছে। অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর আদি নিবাস হলো ভারতের কুচবিহার জেলা বর্তমান ঝাড়খন্ড প্রদেশের নানা প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

বাংলাদেশের বেশ কিছু জেলাতে এদের বসবাস লক্ষ্য করা যায়, তবে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও সলংগা থানায় এবং বগুড়া জেলার শেরপুর থানায় এরা বেশির ভাগ বসবাস করে। তাছাড়াও জয়পুরহাট জেলার কাশপুর, মহিপুর, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট থানায়, নওগাঁ জেলার ধামইরহাট থানায়, রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী, তানোর ও নাচোলে, পাবনা জেলার চাটমোহরে, ফরিদপুর জেলার বালিয়াকান্দি ও বোয়ালমারী থানায়, নাটোর ও খুলনা জেলার কয়রা থানায়, সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় বেশ কিছু মাহাতো পরিবার বসবাস করে আসছে।
মাহাতোরা নিজ সম্প্রদায় ছাড়া অন্য কোন সম্প্রদায়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় না, তবে যদি কেউ এই নিয়মের ব্যতিক্রম করে তাহলে সমাজ থেকে তাকে একঘরে করে রাখে অর্থাৎ সমাজ তার সাথে সহযোগিতার সব সম্পর্ক ছিন্ন করে। মাহাতোরা বিয়ের ক্ষেত্রে পরিবারের মুরব্বীদের মতামতের প্রাধান্য দেয়। মাহাতো সম্প্রদায় মনে করে যদি বিবাহের ক্ষেত্রে সন্তানদের মতামতের প্রাধান্য দেওয়া হয় তাহলে সমাজে অবক্ষয় শুরু হবে, যার পরিণতি খুবই খারাপ। বিয়ের পাঁচ কিংবা তিন দিন আগে লগ্ন বাধা [যাকে মাহাতো ভাষায় 'লাগান বান্ধা' বলে] হয়, এর পর থেকে তারা নিমন্ত্রণ দিতে শুরু করে। নিমন্ত্রণের সাক্ষী হিসেবে তারা পান খাওয়ার 'সুপারি' ব্যবহার করে। সাধারণ আত্মীয়দের দুটি করে সুপারি দেয় এবং জামাই শ্রেণীর আত্মীয় স্বজনকে তারা তিনটি করে সুপারি দেয়। লগ্ন বান্ধার দিন থেকে বিয়ের দিন পর্যন্ত প্রত্যেক দিন রাত্রে পাড়ার সকল মেয়েরা বর ও কন্যার গায়ে হলুদ দিয়ে দেয়। এসময় তারা নানা রকম বিয়ের গীত গায় এবং আনন্দ করে। যেদিন বিয়ে, সেদিন তারা বরের বাড়ি থেকে দুপুর বেলা কন্যার বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়, তবে যাওয়ার আগে মহিলারা বরকে সাথে নিয়ে 'অমলো' খাওয়ার উদ্দেশে আমগাছের নিচে নিয়ে যায়। আম গাছের গোড়ায় দাঁড়িয়ে বরকে দেওয়া হয় কচি আমের পাতা চিবানোর জন্য। কোন রকম চিবানো হলে পাতা চিবানো অবস্থায় মুখে পানি নেয়, বরের মুখের এই পানি মহিলারা বরকে কোলে নিয়ে তার মুখ থেকে অল্প অল্প করে মুখে দেয় এবং আর্শিবাদ করে, একে 'অমলো খাওয়া' বলে। এরপর গরুর গাড়ি অথবা পাল্কিতে করে বিয়ে করার উদ্দেশে কনে বাড়ি যায়। কনে বাড়ি পৌছার সাথে সাথে পাড়ার সকল কৌতুহলি মানুষ গুলো বরকে দেখতে বরের গাড়ির কাছে ভিড় জমায়। মহিলারা কাঁসার থালার মধ্যে আতপ চাউল, দুর্বাঘাস, দিয়ালী জ্বালিয়ে বরকে আহব্বান জানায়। এসময় বরপক্ষের সাথে কন্যা পক্ষের 'নটুয়া' খেলা হয়। এই খেলায় বাঁশের তৈরী করা ঢাল ও তলোওয়ার ব্যবহার করা হয়। যারা খেলায় জেতে তাদের 'মেড়লা' উপহার দেওয়া হয়, মেড়লা হলো পিঠা ভর্তি বড় কলস। বিবাহ বাসর হিসেবে বাড়ির আঙিনায় বর্গাকৃতির একটি ঘের তৈরী করা হয় যা কে মাহাতোরা 'মাড়োয়া' বলে। এই মাড়োয়ার উপরে কাপড়ের সামিয়ানা টানানো হয় এবং মাড়োয়ার মাঝ খানে চারটি ছোট কলা গাছ রোপন করে বিবাহ মন্ডব তৈরী করে, যার মাঝখানে চারটি কলস রাখার মত স্থান তৈরী করে। বিবাহ মন্ডবটি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়। চারটি ছোট কলস মন্ডবের মাঝ খানে রেখে মখে চারটি দিয়ালী রেখে বাতি জ্বালানো হয়। তারপর কন্যাকে মাড়োয়ার মাঝখানে পিঁড়িতে বসিয়ে কন্যার গায়ে সোনা পিতল স্পর্শ করানো হয় একে মাহাতো ভাষায় 'সোনাপিতার' বলে। তারপর মহুয়া গাছের পাতা দিয়ে অমলো খায়। এরপর কন্যাকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গিয়ে সাজানো হয়। কন্যাকে সাজিয়ে বাঁশের ডালিতে বসিয়ে শুন্যি করে মাড়োয়ার মাঝখানে বরের সামনে নিয়ে আসে এসময় কন্যা তার মুখ পানপাতা দিয়ে ঢেকে রাখে। বর মন্ডপের এক পাশে দাঁড়িয়ে আর যারা কন্যাকে ডালিতে ধরে নিয়ে আসে তারা মন্ডপের চারপাশে একবার ঘুরে বরের সামনা সামনি কনেকে নিয়ে আসে, তখন বর কন্যার পানপাতা সহ হাত সরিয়ে মুখ দর্শন করে তখন এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়, একে শুভ দৃষ্টি বলে। এভাবে শুভ দৃষ্টির সময় বর কন্যার মাথায় সাত পাকে সাত বার সিঁদুর দিয়ে দেয় শুভ দৃষ্টি সম্পন্ন করে। তারপর ব্রাহ্মণ মন্ত্র পড়ে বিবাহ সমাপ্ত করে। তবে আগে কার দিনে ব্রাহ্মণ এর প্রচলন ছিল না । তবে কোন কোন পরিবার বিয়ের পরের দিন সকালে আবার বাসি বিয়ে দেয়, বাসি বিয়ে এজন্য বলা হয় কারণ সকাল বেলা টিউবওয়েল বা পুকুর পাড়ে বিয়েটি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে কন্যা বরকে গোসল করিয়ে দেয়। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে ব্রাহ্মণ বাসি বিবাহ সম্পন্ন করেন। মাহাতো বিয়েতে পণ প্রথা আছে। তবে সেটা ছেলে পক্ষ মেয়ে পক্ষকে দেয়। আর পণ হিসাবে আগে কাপড় দেওয়ার চল থাকলেও পরে ২৫০-৭০০ টাকা দেওয়ার চল হয়। কাপড় দিতে হতো মেয়ের সব কাকি, মামি, নানি, দাদী ইত্যাদি সম্পর্কীয়ও লোকদের, যাতে অনেক গরীব পরিবার দিতে পারতো না।
by Earnings : 7.67 Usd (6,721 points)

Related questions

-- Payment Method & Thresholds--Referral Program--Help--
-- FAQ --- Terms --DMCA ---Contact Us --
Language Version--English --Bengali ---Hindi ---
...