সাপ, পাখি, কুমির এবং বন্য কুকুরসহ মরুভূমির অন্যান্য অধিবাসীরাও বাইরের পানি স্টোরেজের ট্যাংক তাদের শরীরেই তৈরি ও ব্যবহার করতে পারে।
অন্যান্য খরাপীড়িত প্রাণীরা তাদের স্বজাতির মৃতদেহের সংরক্ষিত জল নিংড়ে নিয়ে ব্যবহার করতে পারে।
উত্তর আমেরিকার মরুভূমির প্রসারিত পায়ের ব্যাঙেরা তাদের নখের মতো পা ব্যবহার করে মাটি খনন করে ভূগর্ভে বছরের তিন-চতুর্থাংশ সময় নিরাপদে থাকতে পারে। ব্যাঙেরা নিজেদের একটি শ্লেষ্মা ঝিল্লির মধ্যে সঙ্কুচিত-মোড়ানো পানি সংরক্ষণ করতে পারে। ১০ মাস পরে যখন ভারি বৃষ্টির সঙ্কেত পায়, তখন তারা মাটির ওপরে উঠে আসে- জানান ওয়ালসবার্গ।
দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার কিছু গাছ ব্যাঙ তাদের চামড়ার সামনে ক্ষরণের মাধ্যমে জলের ক্ষতি কমায়।
আফ্রিকান লাঙফিসও শুষ্ক মৌসুমে গর্তে বাস ও তাদের শ্রোণী পাখনার ব্যবহার করে শুকনো কাদার মধ্যেকার জল নিয়ে নেয়। এজন্য লাঙফিসের একটি থলি একটি ফুসফুসে বিকশিত হয়েছে এবং তার একটি অত্যন্ত উন্নত কান স্থলজ প্রাণীর কানের অনুরূপ হয়েছে।
মরুভূমির প্রাণীদের জন্য খাদ্যও প্রায়ই পানি শ্রেষ্ঠ উৎস হয়। যখন জল না থাকে, তখনকার জন্য যতোটুকু পারে সংরক্ষণ করে রাখে। যেমন- উত্তর আমেরিকার ক্যাঙ্গারু ইঁদুর ও পকেট ইঁদুর যখন আর্দ্র আবহাওয়ায় গাছপালার বীজ সংগ্রহ করে বছরের বাকি সময় খেয়ে বেঁচে থাকে। এই তীক্ষ্মদন্তি প্রাণী উচ্চ কার্বোহাইড্রেট বীজের বিপাকীয় পানি খেয়ে পান করার প্রয়োজনীয়তা বাইপাস করে। ক্যাঙ্গারু ইঁদুর একটি অসাধারণ কৌশলে তাদের প্রস্রাব থেকেও পানি উদ্ধার করে।
‘ক্যাঙ্গারু ইঁদুর ও পকেট ইঁদুর মুদি দোকানদারদের মতো হয়। তারা তা মজুদ করে এবং খেয়ে বেঁচে থাকে’- বলেছেন ক্যালিফোর্নিয়া রিভারসাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরি দাম।
চর্বিও মরুভূমিতে জলের একটি ভালো উৎস হয়। মরুভূমির যাযাবর মেদবহুল পশুরা বিচ্ছুরিত চর্বিতে শীতলও থাকে। উট ও আফ্রিকার একজাতীয় কৃষ্ণসার মৃগের মতো বড় স্তন্যপায়ী পানির জন্য চর্বি বিপাকের ওপর নির্ভর করে। উট তার কুঁজের মধ্যে ৩৬ কেজি পর্যন্ত পানি সংরক্ষণ করে রাখতে পারে।
পোকা-মাকড় ও ফণিমণসা অনুর্বর সময়ে পানির যোগান পায় শরীর থেকেই।
প্রতি বছর উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে উষ্ণ সোনারন মরুভূমির মাঠে কাজ করেন গ্লেন ওয়ালসবার্গ। তিনি জানান, কমপক্ষে ৬০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির উভচর এবং প্রায় ১০০ প্রজাতির সরীসৃপ শুষ্ক মৌসুমে নানাভাবে পানির অভাব পূরণ করে। মরুভূমির মিতব্যয়ী এসব প্রাণী ঘাম, ঊর্ধ্বশ্বাস, শ্বাস, প্রস্রাব এবং মলত্যাগের সময়ও পানি পাওয়ার প্রতিভাশালী উপায় উদ্ভাবন করেছে।