‘সন্ধি’ শব্দের অর্থ ‘মিলন’। পাশাপাশি দুইটি ধ্বনি বা বর্ণের পরস্পর মিলনকে সন্ধি বলে। যেমনঃ বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয়, হিম + আলয় = হিমালয়, নর + অধম = নরাধম ইত্যাদি।
সন্ধির প্রকারভেদ
সন্ধি প্রধানত দুই প্রকার। যথাঃ (ক) স্বরসন্ধি ও (খ) ব্যঞ্জনসন্ধি।
স্বরসন্ধি : স্বরবর্ণের সাথে স্বরবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে স্বরসন্ধি বলে। যেমনঃ মহা+আশয়=মহাশয়, হিম+আলয়=হিমালয়, জল+আশয়=জলাশয় ইত্যাদি।
ব্যঞ্জনসন্ধি : ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে ব্যঞ্জনবর্ণ অথবা স্বরবর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলে। যেমনঃ পরি+ছেদ=পরিচ্ছেদ, দিক+অন্ত=দিগন্ত, সৎ+ভাব=সদ্ভাব ইত্যাদি।
স্বরসন্ধি ও ব্যঞ্জনসন্ধি ছাড়াও আরো দুই প্রকারের সন্ধি বাংলা ব্যাকরণে প্রচলিত আছে। যথাঃ (ক) বিসর্গ সন্ধি ও (খ) নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি।
বিসর্গ সন্ধি : স্বরবর্ণ বা ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে বিসর্গের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে বিসর্গসন্ধি বলে। যেমনঃ নিঃ+ঠুর=নিষ্ঠুর, নিঃ+চয়=নিশ্চয়, আবিঃ+কার=আবিষ্কার।
নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি : যে সকল সন্ধি ব্যাকরণের নিয়ম অনুসরণ করে না, সেগুলোকে নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি বলে। যেমনঃ বাচঃ+পতি=বাচস্পতি, ভাঃ+কর=ভাস্কর, বন+পতি=বনস্পতি, ষট+দশ=ষোড়শ।
সন্ধির প্রয়োজনীয়তা
বাংলা ব্যাকরণে সন্ধির প্রয়োজনীয়তা অত্যাধিক। যেমনঃ
(ক) সন্ধির সাহায্যে নতুন নতুন শব্দের সৃষ্টি হয়।
(খ) সন্ধি শব্দকে সুন্দর ও শ্রুতিমধুর করে।
(গ) সন্ধি সহজ ও সুন্দর ভাষা তৈরি করে।
(ঘ) সন্ধি ভাষাকে শ্রুতিমধুর করে।
(ঙ) সন্ধি শব্দকে দ্রুত উচ্চারণে সহায়তা করে।
(চ) সন্ধি শব্দ ও বানান শিখতে সাহায্য করে।