শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস : সুন্নাহ
মধ্যযুগীয় মুসলিম ফিকাহবিদগণ সকলের অবাধ মতবাদ প্রত্যাখ্যান করে শরীয়াহর কিছু মাধ্যমিক উৎস নির্ধারণ করেছেন। এইক্ষেত্রে প্রাথমিক উৎস (কুরআন ও সুন্নাহ) উহ্য রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
ঐক্যমত্য বা ইজমা
ইসলামী আইনশাস্ত্রের কোন বিষয়ে মুসলিম আইনবিদদের ঐক্যমত্য বা ইজমা শরিয়াহর তৃতীয় উৎস হিসেবে পরিগণিত হয়। ইসলামী পণ্ডিতগণ কুরআন থেকে অনেক আয়াত উদ্ধৃত করার মাধ্যমে ইজমার গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করতে চান। মুহম্মাদ নিজে বলেছেন,
"আমার অনুসরণকারী কখনো কোন ভ্রান্ত বিষয়ের ওপর একমত হবে না।"
"সমগ্র মুসলিম উম্মতের হাতের ওপর রয়েছে আল্লাহর হাত।"
শরিয়াহর অন্যান্য উৎসের সংজ্ঞা প্রদান এবং তা মুসলিম সম্প্রদায়ে অনুশীলন করা ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর কারণ হলো, ইজমা আইনশাস্ত্রের কোন বিষয়ে অসংখ্য মুসলিমের সর্বস্মমত মতামতের প্রতিনিধিত্ব করে। ইজমা সম্পর্কে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক মতবাদ প্রচলিত আছে। সুন্নী ফিকাহবিদগণ কুরআন ও সুন্নাহর মত ইজমাকেও শরিয়াহর উৎস হিসেবে গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে শীয়ারা ইজমাকে গ্রহণ করলেও শরিয়াহর উৎস হিসেবে উপরিউক্তদ্বয়ের মত মনে করেনা। ইজমা বলতে অতীতে কোন বিষয়ের ওপর একমত হওয়ার চুক্তিকে নির্দেশ করে। তা হোক কাছে বা দূরের কোন দেশে। সুন্নীদের মধ্যে ইজমায় অংশগ্রহণ করা নিয়েও বৈচিত্র্য আছে। যথাঃ
মাযহাব ইজমার গঠন ব্যাখ্যা
হানাফি ইসলামী ফকিহদের সর্বসম্মতিক্রমে কারণ ফকিহগণ এই বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান রাখেন
শাফি ইসলামী সকল ফকিহদের অথবা সম্প্রদায়ের সম্মতিক্রমে কারণ জনগণ সব বিষয় নাও জানতে পারে
মালিকি ইসলামের প্রথম রাজধানী মদীনায় বসবাসরত মুসলিমের সম্মতিক্রমে ইসলাম বলে, 'মদীনা খারাপ মানুষ থেকে দূরে থাকবে, যেভাবে ফার্নিশ মরিচাকে লোহা থেকে দূরে রাখে।'
হাম্বলী মুহম্মাদ (সাঃ) এর সাহাবীদের সম্মতি ও অনুশীলন দ্বারা কারণ তারাই ধর্ম সম্পর্কে বেশি জানে ও তারা বেশি ধার্মিক ছিলো।
উসুলি কোন সময়ের সমস্ত আলেম কর্তৃক সর্বসম্মতি ক্রমে অথবা ইমামের সম্মতি ক্রমে কারণ ইজমা কোন একক বিষয় নয়। এর সাথে অনেক মানুষ জড়িত যাতে করে সুন্নাহ হতে সত্য আহরণ করা যায়।
তথ্যসূত্র: