দিনের মাত্র ১০ থেকে ২০ মিনিট সময় ব্যয় করলেই শরীরের বিভিন্ন অংশের দাগ দূর করা সম্ভব। কিন্তু এর সমাধান কিছুটা সময় সাপেক্ষ। তাই একটু ধৈর্য ধরে নিয়মিত এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করতে হবে। ধীরে ধীরে দেখতে পাবেন দাগ যাওয়ার সাথে সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাহলে চলুন জেনে নেই শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ দূর করার পদ্ধতিগুলো!
শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ দূর করার টিপস
১) লেবু ও শসার রস
একটি আস্ত লেবু চিপে নিন এবং একটি শসার চারভাগের একভাগের রস একটি কাঁচের বাটিতে নিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি একটি তুলোর সাহায্য দিনে তিন বার ব্যবহার করুন। লেবুর সাইট্রিক এসিড সাহায্য করবে সাথে সাথে দাগও দূরও করবে। এছাড়া লেবু ও শসার মিশ্রণ দাগ দূর করতে খুব দ্রুত কাজ করে।
২) অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরার রসকে বলা হয় রূপচর্চার জাদুকর। শুধু রূপচর্চা নয় অ্যালোভেরার জুস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অ্যালোভেরায় আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা দূর করতে চমৎকার কাজ করে। তাজা অ্যালোভেরার পাতা নিন। এরপর উপরের সবুজ অংশ ফেলে দিয়ে ভেতরের সাদা জেল নিয়ে আলতো হাতে একটু ডলে নিয়ে মুখে লাগান দিনে ৩ বার এবং অবশ্যই প্রতিদিন। অ্যালোভেরা দিনের যে কোন সময় ব্যবহার করা যায় এবং যেকোনো দাগ খুব দ্রুত দূর করতে এর কোন জুরি নেই। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এর সুফল আপনি আপনার নিজের চোখে দেখতে পাবেন।
সতর্কত:একটা কথা মনে রাখা দরকার অনেকের অ্যালোভেরা ব্যবহার করার পর চুলকানি হয়। তাই ব্যবহারের পূর্বে হাতে লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দেখে নিন চুলকানি হয় কিনা। যদি না চুলকয় তাহলে ক্ষত স্থানে ব্যবহার করুন চোখ বন্ধ করে। দেখবেন কিছু দিনের মধ্যেই দাগ হালকা হয়ে যাবে।
৩) দুধ ও লেবু রস
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এবং দাগ দূর করতে এই দুটি মিশ্রণের কোন জুড়ি নেই। শরীরের যেকোন স্থানে যেকোনো কালো দাগ দূর করতে একটি লেবুর অর্ধেকটা নিয়ে এর সাথে ১০ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে তুলা দিয়ে লাগান এবং অপেক্ষা করুন ১০ মিনিট। এরপর ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন লেবু বেশি সময় রাখা ভালো না। কেননা লেবুর এসিড বেশিক্ষণ ত্বকে থাকলে ত্বক পুড়ে যেতে পারে।
৪) চন্দন আর গোলাপজল
কথিত আছে প্রাচীনকালে রাণীরা তাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং রক্ষার জন্য চন্দনগুঁড়া ব্যবহার করতেন। সেই প্রাচীনকাল থেকে আজও চন্দনগুঁড়া ও গোলাপ জল রূপচর্চার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও কাযকারী উপাদান। ১টি কাঁচের বাটিতে ২ চা চামচ চন্দনগুঁড়া নিন এবং এর মধ্যে পরিমাণমতো গোলাপ জল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন এবং যে যে স্থানে দাগ আছে সেখানে লাগিয়ে সারারাত রাখুন এবং পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে ফেলুন। চাইলে গোসলের পূর্বে সমস্ত শরীরে লাগিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রেখে তারপর গোসল করতে পারেন। রোজ ব্যবহারে খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
৫) ডিমের সাদা অংশ
একটি ডিমের সাদা অংশের সাথে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ কমলার রস একসাথে মিশিয়ে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন যেখানে দাগ আছে সেখানে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। যেকোনো দাগ দূর করতেতো সাহায্য করবেই তার সাথে ব্ল্যাক হেডস এবং হোয়াইট হেডস দূর করে ত্বকের রং উজ্জ্বল করে।
৬) লেবু ও মধু
একটি লেবুর অর্ধেকটা নিয়ে তার সাথে ২ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে লাগিয়ে নিন মুখে কিংবা শরীরের যেখানে যেখানে দাগ আছে সেসব স্থানে। ত্বকে টানটান ভাব হলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৭) হলুদ, মধু ও দুধ
হলুদ, মধু ও দুধ তিনটি উপকরণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। মুখসহ যে স্থানে দাগ কিংবা আঘাতের চিহ্ন আছে সে সবস্থানে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন না শুকানো পর্যন্ত। শুকিয়ে গেলে পরিস্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার খুব দ্রুত দাগ দূর হয়ে যাবে।
৮) লেবু ও চিনি
লেবুর রস ও চিনি একসাথে মিশিয়ে নিয়ে খুব আস্তে আস্তে মুখে ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজ করার সময় অবশ্যই সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করবেন। সবসময় নিচের থেকে উপরের দিকে ম্যাসাজ করবেন, তা না হলে চামড়া কুঁচকে যাবে। চিনি সম্পূর্ণ না গলে যাওয়া পর্যন্ত ম্যাসাজ করুন। চিনি গলে গেলে নরমাল ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি মৃত কোষ দূর করে নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে।
৯) হলুদ, লেবু ও চিনি
এই প্যাকটি অবশ্যই রাতে ব্যবহার করবেন। এক চিমটি হলুদ পরিমাণমতো চিনি এবং লেবুর রস নিয়ে ম্যাসাজ করুন সেইসব জায়গায় যেখানে দাগ আছে। চিনি গলে গেলে ধুয়ে ফেলুন। চিনির পরিবর্তে মধুও ব্যবহার করতে পারেন।