উদ্ভিদ কলা প্রধানত দুুুই প্রকার। যথা: স্থায়ী কলা ও ভাজক কলা।
স্থায়ী কলা
স্থায়ী টিস্যু বিভাজনে সক্ষম নয় এবং এর উৎপত্তি ভাজক টিস্যু হতে ঘটে। স্থায়ী টিস্যু ৩ প্রকার।
সরল টিস্যু
জটিল টিস্যু
নিঃস্রাবী বা ক্ষরণকারী টিস্যু
সরল টিস্যু
যে স্থায়ী টিস্যুর প্রতিটি কোষ আকার, আকৃতি ও গঠনের দিক থেকে অভিন্ন তাকে সরল টিস্যু বলে। কোষের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে সরল টিস্যুকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
প্যারেনকাইমা
কোলেনকাইমা
স্ক্লেরেনকাইমা
বহিস্ত্বক
জটিল টিস্যু
যে স্থায়ী কলা একাধিক প্রকার কোষ দিয়ে গঠিত এবং সম্মলিতভাবে একই ধরনের কাজ সম্পন্ন করে তাকে জটিল কলা বলে। কাজ,অবস্থান ও গঠন প্রকৃতি অনুযায়ী জটিল কলা দুই প্রকার। যথাঃ ক)জাইলেম কলা খ) ফ্লোয়েম কলা
জাইলেম কলা
জাইলেম শব্দের উদ্ভব হয়েছে গ্রিক শব্দ Xylos থেকে যার ইংরেজি প্রতিশব্দ wood, বাংলায় যাকে বলা হয় কাঠ। বিজ্ঞানী নাগালি ১৮৫৮ সালে এ শব্দের প্রচলন করেন। কাঠ তথা জাইলেমই হল উদ্ভিদের দৃঢ়তা প্রদানকারী অন্যতম প্রধান অংশ। বিভিন্ন কাজকর্মে যে কাঠ পাওয়া যায় তাকে সেকেন্ডারি জাইলেম বলে।
উপাদানসমূহ
একাধিক প্রকার উপাদান নিয়ে গঠিত বলে জাইলেম একটি জটিল কলা । নিম্নলিখিত চার প্রকার উপাদান নিয়ে জাইলেম কলা গঠিত।
ট্রাকিড
ভেসেল
জাইলেম ফাইবার/উড ফাইবার
জাইলেম প্যারেনকাইমা
ভাজক টিস্যু: যে টিস্যুর কোষগুলো বারবার বিভক্ত হয়, ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি হয়, তাকে ভাজক টিস্যু বলে।
স্থায়ী টিস্যু: যে টিস্যুর কোষগুলো পূর্ণভাবে বিকশিত ও কোষবিভাজনে অক্ষম হয় তাকে স্থায়ী টিস্যু বলে।
প্যারেনকাইমা টিস্যু: যেসব স্থায়ী টিস্যু সেলুলোজ নির্মিত পাতলা কোষপ্রাচীরযুক্ত সজীব কোষ সমন্বয়ে গঠিত হয় তাকে প্যারেনকাইমা টিস্যু বলে।
ক্লোরেনকাইমা টিস্যু: প্যারেনকাইমা টিস্যুতে ক্লোরোফিল থাকলে তাকে ক্লোরেনকাইমা বলা হয়।
কোলেনকাইমা : যে সরল স্থায়ী অসমস্থূল কোষপ্রাচীরযুক্ত সজীব কোষে গঠিত, তাকে কোলেনকাইমা টিস্যু বলে।
এ্যরেনকাইমা :জলজ উদ্ভিদের বড় বড় বায়ু কুঠুরীযুক্ত প্যারেনকাইমাকে এ্যারেনকাইমা বলে।
জটিল টিস্যু: যে স্থায়ী টিস্যু একাধিক প্রকার কোষ দিয়ে গঠিত হলেও সম্মিলিতভাবে একই ধরণের কাজে লিপ্ত থাকে, তাকে জটিল টিস্যু বলে।
সরল টিস্যু: যে টিস্যুর উৎপত্তি এবং গঠন, আকৃতি ও কাজ একই রকম, তাকে সরল টিস্যু বলে।
জাইলেম টিস্যু: ট্রাকিড, ভেসেল, জাইলেম ফাইবার এবঙ জাইলেম প্যারেনকাইমা নিয়ে যে টিস্যু গঠিত তাকে জাইলেম টিস্যু বলে।
ফ্লোয়েম টিস্যু: কাজ ও জন্মসূত্রে অভিন্ন কিন্তু আকৃতি ও প্রকৃতিতে ভিন্ন যে টিস্যু সমষ্টি নিয়ে উৎপাদিত খাদ্যসামগ্রীকে উদ্ভিদ দেহের বিভিন্ন অঞ্চলে সংবহনের দায়িত্ব পালন করে সে টিস্যু সমষ্টিকে ফ্লোয়েম টিস্যু বলে।
ভিত্তি টিস্যু: মূল বা কান্ডের প্রধান টিস্যুতন্ত্রকে ভিত্তি টিস্যু বলে।
পরিবহন টিস্যু: জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর সমন্বয়ে যে টিস্যু গঠিত তাকে পরিবহন টিস্যু বলে।
বাস্ট ফাইবার: উদ্ভিদের অঙ্গের গৌণবৃদ্ধির সময় স্ক্লেরেনকাইমা কোষের সমন্বয়ে ফ্লোয়েম ফাইবার নামে এক প্রকার দীর্ঘ কোষ গঠিত হয় যাদের প্রান্তদেশ পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে। এদেরকে বাস্ট ফাইবার বলে।
ক্ষরণকারী টিস্যু: তরুক্ষীর, মধু, গঁদ, রেজিন প্রভৃতি যেসব টিস্যু হতে নি:সৃত বা ক্ষরিত হয় তাকে ক্ষরণকারী টিস্যু বলে।
ত্বকীয় টিস্যু: যে টিস্যুতন্ত্র উদ্ভিদের অঙ্গের প্রাথমিক গঠন সৃষ্টিতে অংশ নেয় এবং উদ্ভিদ অঙ্গের বহিরাবরণ সৃষ্টি করে, তাকে ত্বকীয় টিস্যু বলে।