গাছ আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নিআমত। এই পৃথিবীতে বসবাসের জন্য আল্লাহ তাআলা মানুষকে যত নিআমত দান করেছেন তার অন্যতম হল গাছ। বিভিন্ন প্রকারের গাছ-পালা দিয়ে আল্লাহ পৃথিবীকে সুশোভিত করেছেন। ফলে-ফুলে আমাদের ভরিয়ে দিয়েছেন। আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। আমাদের দান করেছেন সবুজ পৃথিবী। আমাদের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনÑ
إِنَّ اللهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَالنَّوَى يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَمُخْرِجُ الْمَيِّتِ مِنَ الْحَيِّ ذَلِكُمُ اللهُ فَأَنَّى تُؤْفَكُونَ... وَهُوَ الَّذِي أَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجْنَا بِهِ نَبَاتَ كُلِّ شَيْءٍ فَأَخْرَجْنَا مِنْهُ خَضِرًا نُخْرِجُ مِنْهُ حَبًّا مُّتَرَاكِبًا وَّمِنَ النَّخْلِ مِنْ طَلْعِهَا قِنْوَانٌ دَانِيَةٌ وَّجَنَّاتٍ مِّنْ أَعْنَابٍ وَّالزَّيْتُونَ وَالرُّمَّانَ مُشْتَبِهًا وَّغَيْرَ مُتَشَابِهٍ انْظُرُوا إِلٰى ثَمَرِه إِذَا أَثْمَرَ وَيَنْعِه إِنَّ فِي ذٰلِكُمْ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ.
‘নিশ্চয় আল্লাহ শস্যবীজ ও আঁটি বিদীর্ণকারী। তিনি প্রাণহীন বস্তু হতে প্রাণবান বস্তু নির্গত করেন এবং তিনিই প্রাণবান বস্তু হতে নিষ্প্রাণ বস্তুর নির্গতকারী। হে মানুষ! তিনিই আল্লাহ। সুতরাং তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করে কোন্ অজ্ঞাত দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে?...আর তিনিই ঐ সত্তা, যিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, তারপর আমি তা দ্বারা সর্বপ্রকার উদ্ভিদের চারা উদগত করেছি, তারপর তা থেকে সবুজ গাছপালা জন্মিয়েছি, যা থেকে আমি থরে থরে বিন্যস্ত শস্যদানা উৎপন্ন করি এবং খেজুর গাছের চুম্রি থেকে (ফল-ভারে) ঝুলন্ত কাঁদি নির্গত করি এবং আমি আঙ্গুর বাগান উদগত করেছি এবং যায়তুন ও আনারও। তার একটি অন্যটির সদৃশ ও বিসদৃশও। যখন সে বৃক্ষ ফল দেয়, তখন তার ফলের প্রতি ও তার পাকার অবস্থার প্রতি গভীরভাবে লক্ষ কর। এসবের মধ্যে সেই সকল লোকের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যারা ঈমান আনে।’ Ñসূরা আনআম (৬) : ৯৫, ৯৯
তিনি আমাদের জন্য সামান্য আঁটি থেকে অঙ্কুরিত করেন শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট বিশাল বৃক্ষ। শস্যদানা থেকে উদগত করেন হরেক রকম ফসল। এ যে তাঁর কৃপা, একমাত্র তাঁরই দানÑ একথা তিনি আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, যাতে আমরা তাঁর শুকরিয়া আদায় করি।
قُلِ الْحَمْدُ لِلهِ وَسَلامٌ عَلٰى عِبادِه الَّذِينَ اصْطَفٰى آللهُ خَيْرٌ أَمَّا يُشْرِكُونَ ، أَمَّنْ خَلَقَ السَّمٰواتِ وَالْأَرْضَ وَأَنْزَلَ لَكُمْ مِنَ السَّماءِ مَاءً فَأَنْبَتْنَا بِه حَدائِقَ ذاتَ بَهْجَةٍ، مَا كانَ لَكُمْ أَنْ تُنْبِتُوْا شَجَرَهَا أَإِلٰهٌ مَّعَ اللهِ بَلْ هُمْ قَوْمٌ يَّعْدِلُوْنَ.
‘বল, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই এবং সালাম তাঁর সেই বান্দাদের প্রতি যাদেরকে তিনি মনোনীত করেছেন। বল তো, আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, নাকি যাদেরকে তারা আল্লাহর প্রভুত্বে অংশীদার বানিয়েছে তারা? তবে কে তিনি যিনি আকাশম-লী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন? তারপর আমি সে পানি দ্বারা উদগত করেছি মনোরম উদ্যানরাজি। তার বৃক্ষরাজি উদগত করা তোমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না...।’ Ñসূরা নাম্ল (২৭) : ৫৯-৬০
এ আয়াতের শেষে বান্দাকে আল্লাহ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেনÑ বান্দা! এ বৃক্ষরাজি উদগত করার ক্ষমতা তোমার নেই। এ আমি উদগত করি। এ আমার দান। সুতরাং আমারই শুকরিয়া আদায় কর।
গাছ আমাদের কী কী উপকার করে তার ফিরিস্তি অনেক দীর্ঘ। বাহ্যিক দৃষ্টিতে আমরা দেখি, গাছ আমাদের ফল-ফসল দেয়, ফুল দেয়, ছায়া দেয়, কাঠ দেয়। আর বিজ্ঞানের কল্যাণে আমরা জানতে পেরেছিÑ গাছ আমাদের আরো অনেক উপকার করে। গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। আমরা গাছ থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করি আর আমাদের শরীর থেকে যে কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয়, তা শুষে নেয়Ñ এভাবে গাছ আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে, পরিবেশে ভারসাম্য আনে। একটি গাছ বাতাস থেকে ৬০ পাউন্ডেরও বেশি ক্ষতিকারক গ্যাস শোষণ করে এবং ১০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের সমপরিমাণ তাপ নিয়ন্ত্রণ করে। আর যেখানে গাছ বেশি থাকে সেখানে বৃষ্টিও বেশি হয়Ñ এ কথা তো সবারই জানা। গাছ থেকে আমরা কাঠ পাই, যা দ্বারা আসবাব-পত্র তৈরি করি। ঔষধি গাছ থেকে আমরা ঔষধ বানাই। ফুল গাছ আমাদের আঙিনা সুন্দর করে; রং-বে রঙের ফুল আমাদের হৃদয়কে রাঙিয়ে দেয়। বিভিন্ন মৌসুমে নানান রকম ফলের স্বাদে-ঘ্রাণে আমরা বিমোহিত হই। এছাড়াও আমরা আরো কত শত উপকার লাভ করি গাছ থেকে। মোটকথা পৃথিবী বাসোপযোগী থাকা ও মানুষের জীবন ধারণের সাথে ওতপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে গাছ বা বৃক্ষ। ফলে ইসলাম বৃক্ষরোপণের প্রতি উৎসাহিত করেছে, একে সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য করেছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَغْرِسُ غَرْسًا، أَوْ يَزْرَعُ زَرْعًا، فَيَأْكُلُ مِنْهُ طَيْرٌ أَوْ إِنْسَانٌ أَوْ بَهِيمَةٌ، إِلَّا كَانَ لَهُ بِه صَدَقَةٌ.
যখন কোনো মুসলিম গাছ লাগায়, অথবা কোনো ফসল বোনে, আর মানুষ, পাখি বা পশু তা থেকে খায়, এটা রোপণকারীর জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২৩২০; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৫৩) আরেক বর্ণনায় এসেছেÑ “কিয়ামত পর্যন্ত (অর্থাৎ যতদিন গাছটি বেঁচে থাকবে বা তা থেকে উপকার গ্রহণ করা হবে) সে গাছ তার জন্য সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য হবে।” Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৫২
আমার লাগানো গাছ থেকে যে কেউ উপকার গ্রহণ করুক তা আমার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। এমন কি কেউ যদি আমার লাগানো গাছ থেকে চুরি করে খায়, সেটাও বিফলে যাবে না। হাঁ, চুরির কারণে তার গোনাহ হবে, কিন্তু আমি সওয়াব পেয়ে যাবো। হাদীসে এসেছেÑ
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَغْرِسُ غَرْسًا إِلَّا كَانَ مَا أُكِلَ مِنْهُ لَهُ صَدَقَة، وَمَا سُرِقَ مِنْهُ لَهُ صَدَقَةٌ، وَمَا أَكَلَ السَّبُعُ مِنْهُ فَهُوَ لَهُ صَدَقَةٌ، وَمَا أَكَلَتِ الطَّيْرُ فَهُوَ لَهُ صَدَقَةٌ، وَلَا يَرْزَؤُهُ أَحَدٌ إِلَّا كَانَ لَهُ صَدَقَةٌ.
মুসলিম যখন কোনো গাছ রোপণ করে, তো এর যে ফল খাওয়া হবেÑ এটা তার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। এ থেকে যা চুরি যাবে তাও সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। হিং¯্র প্রাণীও যদি তা থেকে খায় তাও সদাকা হবে। পাখি খেলে সদাকা হবে। (এমন কি) যে কেউ যে কোনোভাবে এ থেকে (উপকার) গ্রহণ করবে তা সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৫২
এ বর্ণনার শেষ অংশ থেকে বোঝা যায়, শুধু ফলবান গাছ উদ্দেশ্য নয় এবং শুধু ফল খেয়ে উপকার গ্রহণ উদ্দেশ্য নয়, বরং যে কোনো প্রকারের গাছ এবং যে কোনো প্রকারের উপকার গ্রহণই সওয়াব অর্জনের মাধ্যম বলে গণ্য হবে।
আরেক বর্ণনায় এসেছেÑ
مَا مِنْ رَجُلٍ يَغْرِسُ غَرْسًا إِلَّا كَتَبَ اللهُ لَهُ مِنَ الْأَجْرِ قَدْرَ مَا يَخْرُجُ مِنْ ثَمَرِ ذَلِكَ الْغِرَاس.
কোনো ব্যক্তি যখন গাছ লাগায়, তো এ গাছে যত ফল হবে, তার আমলনামায় এ ফল পরিমাণ সওয়াব লেখা হবে। Ñমুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩৫২০
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন নিজ হাতে গাছ লাগিয়েছেন, গাছ লাগানোর প্রতি উৎসাহিত করেছেন, তাঁর সাহাবীগণও নিজেরা গাছ লাগাতেন এবং একে সওয়াবের কাজ মনে করতেন। এমন কি এটি যে একটি ভালো কাজÑ এ বিষয়ে কারো মাঝে অস্পষ্টতা বা অজ্ঞতা থাকলে তা দূর করতেন।
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، أَنَّ رَجُلًا، مَرَّ بِهِ وَهُوَ يَغْرِسُ غَرْسًا بِدِمَشْقَ فَقَالَ لَهُ : أَتَفْعَلُ هَذَا وَأَنْتَ صَاحِبُ رَسُولِ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ : لَا تَعْجَلْ عَلَيَّ سَمِعْتُ، رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " مَنْ غَرَسَ غَرْسًا لَمْ يَأْكُلْ مِنْهُ آدَمِيٌّ، وَلَا خَلْقٌ مِنْ خَلْقِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا كَانَ لَهُ صَدَقَةً.
হযরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি গাছ লাগাচ্ছিলেন, এমন সময় তার পাশ দিয়ে এক ব্যক্তি যাচ্ছিলো। তাঁকে গাছ লাগাতে দেখে লোকটি বলে উঠলোÑ আপনি রাসূলের সাহাবী হয়ে গাছ লাগাচ্ছেন! তখন আবু দারদা রা. তাকে বললেন, একটু শুনে যাও; আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যখন কেউ গাছ লাগায়, আর তা থেকে কোনো মানুষ বা কোনো প্রাণী খায়, এটা তার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হয়। Ñমুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৭৫০৬
আরেক বর্ণনায় আবু দারদা রা.-এরই একটি ঘটনা এভাবে এসেছে, (যা শরহুস সুন্নাহয় বাগাভী রাহ. আরেক বর্ণনার অধীনে পেশ করেছেন)Ñ
আবু দারদা রা. একটি ফলগাছ লাগাচ্ছিলেন, এক ব্যক্তি তাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। সে বলল, আপনি তো অনেক বৃদ্ধ হয়ে গেছেন, মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে, আপনি কেন এ গাছ লাগাচ্ছেন? এ গাছে ফল হতে হতে তো অনেক বছর লেগে যায়। তখন উত্তরে তিনি বললেন, এতে কী সমস্য? এর ফল অন্য মানুষ খাবে কিন্তু আমি তো এর সওয়াব পেয়ে যাবো। (শরহুস সুন্নাহ, বাগাভী, বর্ণনা ১৬৫২-এর অধীনে)
এ থেকেই বোঝা যায়, বৃক্ষরোপণের বিষয়ে নবীজীর উৎসাহকে সাহাবায়ে কেরাম কত গুরুত্ব সহকারে অনুধাবন করেছেন ও আমল করেছেন।
সবুজায়নে নবীজীর অভিনব পদ্ধতি
মানুষের কল্যাণেই যেহেতু বেশি বেশি গাছ লাগানো প্রয়োজন, সবুজ ভূমির প্রয়োজন, ফলে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু গাছ লাগানোর প্রতি উৎসাহিত করেই ক্ষান্ত হননি বরং সবুজায়নের নতুন পথও উদ্ভাবন করেছেন। যে সকল জমি অনাবাদী পড়ে আছে সেগুলো যেন আবাদ হয়, সবুজ ভূমি বৃদ্ধি পায়, তাই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করলেন। তিনি ঘোষণা করলেনÑ
مَنْ أَحْيَا أَرْضًا مَيِّتَةً فَهِيَ لَهُ.
যে ব্যক্তি কোনো পতিত ভূমি আবাদ করবে তা তার মালিকানায় চলে আসবে। Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ১৩৭৮
এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান ফিকহের কিতাবে বিস্তারিত রয়েছে।
বৃক্ষরোপণের প্রতি নবীজীর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ
বৃক্ষরোপণের বিভিন্ন ফযীলতের ঘোষণার সাথে সাথে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সর্বোচ্চ গুরুত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। এক হাদীসে তিনি ইরশাদ করেনÑ
إِنْ قَامَتْ عَلَى أَحَدِكُمُ الْقِيَامَةُ، وَفِي يَدِهِ فَسِيلَةٌ فَلْيَغْرِسْهَا.
যদি কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ মুহূর্তেও তোমাদের কারো হাতে একটি চারাগাছ থাকে, তাহলে সে যেন তা রোপণ করে দেয়। Ñমুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২৯০২; আলআদাবুল মুফরাদ, বুখারী, হাদীস ৪৭৯
বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটব না
যে বৃক্ষ আমার এত এত উপকার করে, বিনা প্রয়োজনে আমরা যেন তা না কাটি। এটি যেমন এ নিআমতের না-শুকরি হবে তেমনি নিজের ক্ষতি ডেকে আনা হবে। কারণ, বৃক্ষ যত কমতে থাকবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। খরা, অনাবৃষ্টি দেখা দেবে। পৃথিবীর আবাদী অনাবাদীতে পরিণত হবে। মানুষসহ পশু-পাখি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। সুতরাং বিনা প্রয়োজনে আমরা গাছ কাটব না।
এক হাদীসে ইরশাদ হয়েছেÑ
مَنْ قَطَعَ سِدْرَةً صَوَّبَ اللَّهُ رَأْسَهُ فِي النَّارِ.
যে ব্যক্তি কোনো বড়ই গাছ কাটবে আল্লাহ তাকে অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।
আবু দাউদ রাহ.-কে এ হাদীসের অর্থ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনÑ
এ হাদীসের বক্তব্যটি সংক্ষিপ্ত। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, যে ব্যক্তি অকারণে বা না-হকভাবে মরুভূমির কোনো বড়ই গাছ কাটবে, যেখানে পথিক বা কোনো প্রাণী ছায়াগ্রহণ করে, আল্লাহ তাকে অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (দ্র. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫২৩৯) তবে কেউ কেউ বলেন, এ হাদীস হরম অঞ্চলের বড়ই গাছ কাটার সাথে সম্পৃক্ত। তো যাইহোক অকারণে গাছকাটা যে নিজেদের ক্ষতি ও সওয়াব থেকে মাহরূমিÑ উপরের আলোচনায় আশা করি তা স্পষ্ট হয়েছে। সুতরাং আমরা বেশি বেশি গাছ লাগাব, অকারণে গাছ কাটব না।