হালাল শব্দের আভিধানিক অর্থ সিদ্ধ। আর শরীয়তের ভাষায় যা করার অনুমতি দিয়েছে বা করতে নিষেধ করেনি এমন বস্তু বা কাজকে হালাল বলে। হারাম শব্দের আবিধানিক অর্থ নিষিদ্ধ। আর শরীয়তের ভাষায় যা স্পষ্ট ভাষায় নিষেধ করেছেন, যা করার পরিণামে পরকালে শাস্তি অনিবার্য এরূপ বস্তু ও কাজকে হারাম রূপে আখ্যায়িত করা হয়।
হালাল ও হারাম সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন : ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমরা হালাল ও পবিত্র বস্তুর মধ্য হতে ভক্ষণ কর! আর তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (বাকারা ১৬৮)
‘হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যেসব পবিত্র বস্তু জীবিকারূপে দান করেছি, তা হতে ভক্ষণ কর এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা একান্তভাবে তাঁরই ইবাদত কর।’ (বাকারা ১৭২)
‘এখন তোমরা যদি আল্লাহর আয়াতসমূহের প্রতি ঈমানদার হয়ে থাক তাহলে যেসব জন্তুর ওপর (যবেহ করার সময়) আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে সেসবের গোশত খাও।’ (আনয়াম ১১৮)
‘আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে যে জিনিসের ওপর তা তোমরা খাবেনা তার কি কারণ থাকতে পারে? অথচ নিতান্ত ঠেকার সময় ছাড়া অন্য সর্বাবস্থায় সেসব জিনিসের ব্যবহার আল্লাহ হারাম করে দিয়েছেন, তা তিনি তোমাদেরকে বিস্তারিত করে বলে দিয়েছেন।’ (আনয়াম ১১৯)
‘তিনি তো তোমাদের উপর মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশত এবং আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো নামে যবেহকৃত প্রাণী হারাম করেছেন। অবশ্য যে ব্যক্তি অন্যোপায় হয়েছে সে সীমালংঘনকারী বা অভ্যস্ত নয়, তবে তার জন্য তা ভক্ষণে গুণাহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াবান।’ (বাকারা ১৭৩)
‘হে নবী! তুমি কেন সেই জিনিস হারাম কর যা আল্লাহ তোমার জন্য হালাল করেছেন? (তা কি এই জন্য যে) তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তোষ পেতে চাও? আল্লাহ ক্ষমাকারী, অনুগ্রহকারী।’ (তাহরীম ১)
‘হে নবী! তাদের বল, আমার আল্লাহ যেসব জিনিস হারাম করেছেন তাতো এই নির্লজ্জতার কাজ প্রকাশ্য বা গোপনীয় এবং গুণাহের কাজ ও সত্যের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি।’ (আরাফ ৩৩)
হালাল ও হারাম সম্পর্কে হাদীস : হযরত মিকদাম ইবনে মায়াদী কারাব (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, মানুষের খাদ্যের মধ্যে সেই খাদ্যই সবচেয়ে উত্তম, যে খাদ্যের ব্যবস্থা সে নিজ হস্ত উপার্জিত সম্পদ দ্বারা করে। আর আল্লাহর প্রিয় নবী হযরত দাউদ (আ.) আপন হাতের কামাই হতে খাদ্য গ্রহণ করতেন। (বুখারী)