১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ৫, ১০, ২৫ এবং ৫০ পয়সা মূল্যের ধাতব মুদ্রার প্রচলন করা হয়।
কাগুজে মুদ্রা
বর্তমানে, স্বল্প ব্যবহৃত নোট হচ্ছেঃ ৳১ এবং ৳২৫, ৳৪০ ও ৳৬০ হচ্ছে স্মারক নোট, অন্যদিকে বহুল ব্যবহৃত নোট হচ্ছেঃ ৳২, ৳৫, ৳১০, ৳২০, ৳৫০, ৳১০০, ৳২০০, ৳৫০০ ও ৳১০০০। ৳১০ এবং তার বড় অঙ্কের কাগুজে মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রচলন করে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের স্বাক্ষর থাকে। ৳১, ৳২ এবং ৳৫ নোট বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় প্রচলন করে এবং এতে অর্থসচিবের স্বাক্ষর থাকে। ২০২০ সালে ১৭ ই মার্চ মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে অর্থাৎ বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ৳২০০ টাকা মূল্যমানের বিশেষ নোটা (বিনিময় যোগ্য) প্রচলন করে। এই নোটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে কথাটি লেখা থাকবে। কিন্তু ২০২১ সালে এই কথা লেখা নোট ছাপাবেনা এবং ৳২০০ টাকার নিয়মিত নোট ছাপাবে।
রাশিয়ার একটি অনলাইন এন্টারটেইনমেন্ট আউটলেটে অনুষ্ঠিত এক ভোটাভুটিতে বাংলাদেশী ৳২ নোট পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ব্যাংক নোটের মর্যাদা পেয়েছে। যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মুদ্রাও প্রতিযোগিতায় ছিল।
ধাতব মুদ্রা
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ৫, ১০, ২৫ এবং ৫০ পয়সা মূল্যের ধাতব মুদ্রার প্রচলন করা হয়। এরপর ১৯৭৪ সালে ১ পয়সা এবং তারও পরে ১৯৭৫ সালে ৳১ মূল্যের ধাতব মুদ্রা প্রবর্তন করা হয়। অত:পর ৳২ মূল্যের ধাতব মুদ্রা প্রবর্তন করা হয়। বর্তমানে ৳৫ মূল্যমানের ধাতব মুদ্রাও প্রচলিত আছে।
১৯৪৭ হতে ১৯৭১
১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর, পূর্ব বাংলায় (পাকিস্তান অধিরাজ্যের অংশ) এবং ১৯৫৬ সালে পূর্ব বাংলার পুনঃনামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান; যেখানে পাকিস্তানি রুপিতেও "টাকা" শব্দটি মুদ্রিত ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে মুদ্রা হিসেবে এই ভূখণ্ডে পাকিস্তানি রুপি প্রচলিত ছিল। ৪ঠা মার্চ ১৯৭২ সালে সরকারী মুদ্রা হিসেবে- "টাকা" -কে ঘোষণা করা হয়। সর্বত্র এর প্রচলন না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতার বেশ কয়েক মাস পরেও পাকিস্তানি রুপির ব্যবহার ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা একটি বেসরকারী রীতি প্রচলিত ছিলঃ পাকিস্তানি রুপির নোটগুলিতে বাংলাতে "বাংলা দেশ" এবং ইংরেজিতে "Bangla Desh" রবার স্ট্যাম্প দিয়ে মুদ্রাঙ্কন করা। ৮ জুন ১৯৭১-এ পাকিস্তানি সরকার সমস্ত রবার স্ট্যাম্প-সহ নোটগুলিকে বেআইনি, অবৈধ এবং মূল্যহীন ঘোষণা করে।[১]
১৯৭২ হতে বর্তমান
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের মুদ্রার নাম টাকা রাখে। পরবর্তীতে টাকার সংকেত ৳ নির্ধারণ করা হয়।
প্রথম কোষাগার নোট ১৯৭২ সালে ৳১-র ছিল, যেটি ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।
এক টাকার শতাংশকে পয়সা নামে অভিহিত করা হয়। অর্থাৎ ৳১ সমান ১০০পয়সা।
৳২ কোষাগার নোট ১৯৮৯ সালে ঘোষণা করা হয়।
১৯৭২ সালে টাকার প্রথম নোটগুলিঃ ৳৫, ৳১০ ও ৳১০০ মূল্যে ঘোষণা করা হয়।
১৯৭৫ সালে প্রথম ৳৫০ নোট ঘোষণা, ১৯৭৭ সালে প্রথম ৳৫০০ নোট এবং ১৯৮০ সালে প্রথম ৳২০ নোট ঘোষণা হয়।
৳১০০০ মূল্যমানের নোট ২০০৮ সালে প্রথম ঘোষণা করা হয়।
৳২০০ মূল্যমানের নোট প্রথম প্রচলিত হয় ১৭ মার্চ, ২০২০ সালে।[২]
বাংলাদেশে ৳১, ৳২, ৳৫, ৳১০, ৳২০, ৳৫০, ৳১০০, ৳৫০০ এবং ৳১০০০ মুল্যমানের কাগুজে নোট প্রচলিত রয়েছে। এছাড়াও ১ পয়সা, ৫ পয়সা, ১০ পয়সা, ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা, ৳১, ৳২ এবং ৳৫ মূল্যমানের ধাতব মুদ্রা প্রচলিত রয়েছে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের পক্ষে কাগুজে নোট প্রচলন এবং নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত। এছাড়াও ১ পয়সা, ৫ পয়সা, ১০ পয়সা, ২৫ পয়সা ও ৫০ পয়সা বর্তমানে অচল।