বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আট শতাংশের বেশি। অন্যদিকে দ্বিপক্ষীয় বা বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৬৭ কোটি ডলার, যা জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি।
এবার দেখা যাক, কে কত অর্থ পায় বাংলাদেশের কাছে। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে। সংস্থাটির কাছ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৮১৬ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংকের পরের স্থানে আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির কাছে ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৩২৮ কোটি ডলার। এরপর আছে যথাক্রমে জাপান, রাশিয়া ও চীন।
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু জাপানের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৯২৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া রাশিয়া ও চীনের কাছে ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ৫০৯ কোটি ডলার ও ৪৭৬ কোটি ডলার। আইএমএফের কাছে ঋণের পরিমাণ ৯৮ কোটি ডলার। নতুন করে সংস্থাটির কাছ থেকে আরও ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ।
একসময় প্যারিস কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশকে ঋণ দিত। প্রতিবছর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বৈঠকে বসতেন দাতা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ওই সব বৈঠকে নিজেদের চাহিদার কথা জানাতেন। দাতারাও নানা শর্তে ঋণ দিত। তখন ওই সব দাতাদের নিয়ে যে জোট তৈরি হয়েছিল, তাকে প্যারিস ক্লাব হিসেবে ডাকা হতো। ২০০২ সাল পর্যন্ত প্যারিস কনসোর্টিয়ামের অস্তিত্ব ছিল। এরপর বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ) গঠিত হয়।
বহু বছর পর আইএমএফের প্রতিবেদনে প্যারিস ক্লাবের কথাটি এসেছে। সেই ঋণের পালা এখনো চলছে। সেখানে বলা হয়েছে, জাপান, রাশিয়াসহ প্যারিস ক্লাবের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৫৫১ কোটি ডলার। অন্যদিকে প্যারিস ক্লাবের সদস্য নয়, এমন দেশগুলোর কাছেও বাংলাদেশের বড় অঙ্কের ঋণ আছে। এর পরিমাণ ৬১৬ কোটি ডলার। চীন, ভারতের মতো দেশ হলো নন-প্যারিস ক্লাবের সদস্য। ভারতের কাছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ১০২ কোটি ডলার।