রসায়ন ও পদার্থ বিদ্যায় কোনো পরমাণুর কেন্দ্রে প্রোটনের সংখ্যাকে পারমাণবিক সংখ্যা বলে। আধান নিরপেক্ষ পরমাণুতে ইলেকট্রন-এর সংখ্যাও পারমাণবিক সংখ্যার সমান। পারমাণবিক সংখ্যা অনন্যভাবে একটি মৌলিক পদার্থকে চিহ্নিত করে। নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক চার্জের সংখ্যা এবং পারমাণবিক সংখ্যা সমান থাকে। প্রোটনের ভর ও নিউট্রনের ভর প্রায় সমান বলে তাদের সমষ্টি অর্থাৎ পরমাণুর ভর সংখ্যাকেই পারমাণবিক ভর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভর সংখ্যা হল নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যা যাকে A দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
বিজ্ঞানী মোসলে ১৯১৩ সালে বিভিন্ন মৌলের রঞ্জন রশ্মি-বর্ণালী পরীক্ষা করে দেখেন যে, প্রত্যেক মৌলের বৈশিষ্ট্যগুলোকে একটা সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা যায়, এবং এটা পারমাণবিক ভরের প্রায় অর্ধেক। এখানে বলে রাখা ভাল যে, পারমাণবিক সংখ্যার ধারণার পুর্বেই বিজ্ঞানীগণ পারমাণবিক ভরের সম্বন্ধে ধারণা রাখতেন। যা হোক, মোসলে এই সংখ্যাটির নাম দেন পারমাণবিক সংখ্যা (Atomic Number)। পরবর্তিতে দেখা গেল যে, এ সংখ্যাটি পরমাণুর নিউক্লিয়াস এ উপস্থিত প্রোটন সংখ্যা (বা নিউক্লিয়াসে উপস্থিত ধনাত্বক চার্জ) এর সমান। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এর প্রোটন সংখ্যা।
পারমাণবিক সংখ্যাঃ
কোন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যাকে মৌলটির পারমাণবিক সংখ্যা বলে। পারমাণবিক সংখ্যা একটি মৌলের বৈশিষ্ট্যসূচক ধর্ম। পারমাণবিক সংখ্যাকে Z অথবা at. no দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
পারমাণবিক সংখ্যার বৈশিষ্ট্যঃ
দুটি মৌলের পারমাণবিক ধর্ম কখনো এক হতে পারে না। মৌলের ধর্ম এর পারমাণবিক সংখ্যার উপর নির্ভর করে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার আগে ও পরে এই পারমাণবিক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হবে না। তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণুতে, মানে যখন পরমাণুটি আয়নে পরিণত হয়ে যায় নি, তখন প্রোটন সংখ্যা আর ইলেক্ট্রন সংখ্যা সমান থাকে। কিন্তু আয়নে পরিণত হলে, প্রোটন আর ইলেক্ট্রনের সংখ্যা আর সমান থাকে না।
উদাহরণঃ
সোডিয়ামের নিউক্লিয়াসে মোট 11 টা প্রোটন উপস্থিত। তাই সোডিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা 11। একই ভাবে, Mg, Cl, Ca, U- এইগুলার পারমাণবিক সংখ্যা যাথাক্রমে 12, 17, 20, 92।