আপনি আপনার ঘর বাড়ি যতই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন না কেনো কোনো না কোনোভাবে পোকামাকড় চলেই আসে। ঘরে নানা পোকামাকড়ের উপদ্রব খুব সাধারণ একটি সমস্যা। তবে এটি শুধু ঝামেলাই বাড়ায় না, নানা রোগও ছড়ায়। কীভাবে ঘরে পোকার উপদ্রব কমানো যায় তার কিছু উপায় জেনে নিন।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। আরশোলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের চক, ইঁদুরের হাত থেকে রেহাই পেতে লাল গমের দানার মতো লানির্যাট ওষুধ, জাঁতাকল, বাক্সকল ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যান্য পোকার উপদ্রব থেকে রেহাই পেতে ব্যবহার করতে পারেন বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় মারার স্প্রে। এসব ছাড়াও কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে, যার সাহায্যে সহজে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সেগুলো হল।
. আলমারিতে বা কাপড় রাখার যেকোনো স্থানে নিমপাতা শুকনো করে কাপড়ে বেঁধে কিংবা কালোজিরা কাপড়ের পুঁটলি করে রেখে দিলে কাপড়চোপড়ে পোকা আক্রমণ করে কম।
. আবার অনেক সময় কাপড়ের ভেতর ন্যাপথলিন ব্যবহার করলে পোকা ধরার আশঙ্কা কম থাকে এবং কাপড়ে সুগন্ধও থাকে।
. মাঝেমধ্যে রোদে দিলে কাপড়ে পোকা ধরে না।
. রান্নাঘরে চিনির কৌটায় দু-একটা লবঙ্গ রেখে দিলে পিঁপড়ের উপদ্রব কম হয়।
. ঘরের দেয়ালে উইপোকার উপদ্রব বেশি দেখা যায়। এ থেকে রেহাই পেতে দেয়ালের যে স্থান থেকে উইপোকা বের হয়, সেখানে কর্পূরের গুঁড়ার সঙ্গে লিকুইড প্যারাফিন মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে।
. শুকনো নিমপাতার গুঁড়ো রান্নাঘরের যেকোনো স্থানে ছড়িয়ে রাখলে পোকার উপদ্রব কম হয়ে থাকে।
. যেকোনো খাবার পোকার হাত থেকে রক্ষার জন্য খাবার টেবিলের ওপর যেন কোনো লাইট না রাখা হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। অবশ্যই বাড়ির নকশা করার সময় ডাইনিং রুমের খাবার টেবিলের ওপর কিংবা রান্নাঘরে চুলার ওপর লাইটের ব্যবস্থা রাখা যাবে না। কারণ, কোনো কোনো ঋতুতে লাইটে পোকার উপদ্রব বেশি থাকে।
. তেলাপোকা, ইঁদুর, মশা, মাছি—এসব পোকার হাত থেকে রক্ষা করতে অবশ্যই প্রতিটা ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
. আমাদের বাসাবাড়িতে সাধারণত কালো ইঁদুরের উপদ্রব বেশি হয়ে থাকে। যেকোনো ধরনের ইঁদুরের হাত থেকে রেহাই পেতে ইঁদুরের গর্তের মুখে মরিচের ধোঁয়া দেওয়া যেতে পারে।
. এছাড়া ইঁদুরের গর্তে পানি ঢাললে ইঁদুরের উপদ্রব কমে।
. তেলাপকা মারার জন্য অনেক অনেক রকমের ওষুধ আছে যেমন – চক, বেগন স্প্রে, বরিক এসিড পাউডার ( Boric Acid Powder)। বরিক এসিড পাউডার ওষুধটা খুবই সহজে ফার্মেসিতে পাওয়া যায় । দামও কম, ২০-৪০ টাকা। বরিক এসিড পাউডারের সাথে কিছু চিনি মিশিয়েও দিতে পারেন। তেলাপোকার আবাসস্থলে রাতের বেলা এটা ব্যাবহার করুন। এক সপ্তাহ পর ফল পাবেন।
. পোকামাকড় মারার ওষুধ অবশ্যই রাতে দিতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই আবার পরিষ্কার করতে হবে।
. ইঁদুর মারার ওষুধ খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। তাহলে দ্রুত ইঁদুর মারা যাবে।
. ঘরের যেখানে ময়লা-আবর্জনা জমে থাকে সেখানে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
. ঘর থেকে মাছি দূর করতে গুড়ের সঙ্গে ফিনিশ পাউডার মিশিয়ে দিতে হবে।
. ঘর থেকে মশা-মাছি দূর করতে স্যাভলন দিয়ে ঘর পরিষ্কার করতে হবে। আর মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে ঘরে যেন আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
. বাসাবাড়ির আশপাশের নর্দমা আবর্জনামুক্ত রাখতে হবে।
. গন্ধযুক্ত কোনো খাবার রাখা যাবে না ঘরে, তাতে মশা-মাছির উপদ্রব বাড়বে।
. সন্ধ্যার দিকে ধূপের ধোঁয়া দিলে মশার উপদ্রব কমে যায়।
. অকেজো কোনো জিনিস ঘরে রাখা যাবে না।
পোকামাকড়ের উপদ্রব যেন না হয়, এ জন্য কীটনাশক তো ব্যবহার করতেই পারেন। তবে এসব আমাদের জন্য ক্ষতিকর। তাই ঘরোয়া ব্যবস্থাগুলো নিয়ে ঘরকে পোকামাকড়ের উপদ্রবমুক্ত রাখার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।